চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি চিকিৎসক নেই ১৩ বছর ধরে। এতে বন্ধ রয়েছে অস্ত্রোপচার। অলস পড়ে রয়েছে অপারেশন থিয়েটার। বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের।
১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত মতলব উত্তর উপজেলা। এখানকার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ২০০৮ সালে ছেংগারচর পৌরসভার মরাদোন এলাকায় নির্মাণ করা হয় ৩১ শয্যার মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এটি নির্মিত হওয়ায় চিকিৎসকেরা এখানে নিয়োগ পেলেও দ্রুতই অন্যত্র চলে যান। ফলে হাসপাতাল নির্মাণের ১৩ বছর অতিবাহিত হলেও অপারেশন থিয়েটারটি এখনো কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই জুনিয়র কনসালট্যান্ট গাইনি, জুনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জারি, জুনিয়র কনসালট্যান্ট মেডিসিন। তিন মাস আগে জুনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যানেসথেসিয়া নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু জুনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জন ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট গাইনি চিকিৎসক না থাকায় অ্যানেসথেসিওলজিস্ট কোনো সেবা দিতে পারছেন না।
এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়োগে থাকলেও তিনি ডেপুটেশনে কাজ করছেন অন্যত্র। এখানকার সাব সেন্টারে ছয়জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু আছে দুজন। তবে এর মধ্যে একজন আবার ডেপুটেশন নিয়ে চলে গেছেন অন্যত্র।
উপজেলার পাহাড়ের চক থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলী মিয়া বলেন, ‘আমার বোনের সন্তান হবে। ব্যথা উঠলে আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এসে জানতে পারি এখানে অপারেশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাঁরা আমাদের অন্য হাসপাতালে যেতে বলেন। পরে ছেংগারচরে একটা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে অপারেশন করাই।’
কলাকান্দা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কাদির মোল্লা বলেন, ‘প্রসূতিরা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সবিমুখ। কেননা এখানে চিকিৎসক নেই। তাই অপারেশন করা হয় না। অথচ দরিদ্র মায়েদের জন্যই ভরসা হওয়ার কথা ছিল এই সরকারি হাসপাতালটি। এখানে গাইনি চিকিৎসক থাকলে হানিরপাড়ের দরিদ্র মা তামান্নাকে ছেংগারচর প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার করিয়ে সন্তান বিক্রি করে হাসপাতালের বিল মেটাতে হতো না।’
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, ‘এখন অপারেশন বন্ধ রয়েছে। আশা করি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে অপারেশন থিয়েটারটি চালু করতে পারব।’
স্টাফ করেসপন্ডেট, ১৭ মার্চ ২০২২