আলোচিত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী জানিয়েছেন কেউ বললেই তাকে কালেমা পাঠ করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করান না। বিভিন্ন মাহফিলে গিয়ে বারবার এ বিষয়টিতে নিজের অপারগতা প্রকাশ করার পরও গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে ভুল বার্তা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি ফরিদপুরে এক মাহফিলে অংশ নিয়ে লাখো মুসল্লির সামনে এমন দাবি করেন আজহারী। তিনি বলেন, অন্য ধর্মের ভাই আমার কাছে এসে মুসলমান হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমি অপারগতা প্রকাশ করি। তখন মঞ্চে উপস্থিত অন্য আলেমের কাছে ওই ব্যক্তি কালেমা পাঠ করে মুসলমান হন। কিন্তু গণমাধ্যমে আমার নাম প্রচার হয়।
সম্প্রতি নরসিংদীর জামেয়া কাসমিয়া মাদ্রাসার মাহফিলে এক হিন্দু নারীর স্টেজে উঠে কালেমা পাঠ করা নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার কথাটি উল্লেখ করেন আজহারী।
তিনি বলেন, বুকে ব্যথা নিয়েও আমি ওই মাহফিলে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে এক হিন্দু বোন কালেমা পড়ে মুসলমান হতে চেয়েছিলেন। আমি রাজি ছিলাম না। স্টেজে নারী না উঠিয়ে পেছনের কোনো কক্ষে আলেমের মাধ্যমে ওই নারীকে শাহাদা পাঠ করানোর পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু এলাকার গণ্যমান্যরা আমার সে কথা রাখেননি। আমাকে কিছু না জানিয়েই হুট করে ওই বোনকে স্টেজে নিয়ে আসেন তারা। এরপরও আমি রাজি না হলে শ্রদ্ধেয় কামাল উদ্দিন জাফরি হুজুর ওই নারীকে কালেমা পাঠ করান। কিন্তু গণমাধ্যমে আমার নাম আসে। এ নিয়ে অনেক বিতর্কের মুখে পড়ি।
একইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জে হয়েছে বলে জানান আজহারী। তিনি বলেন, সেই মাহফিলের আয়োজক কমিটির সদস্যরা আমাকে জানায় একই পরিবারের ১১ জন হিন্দু মুসলাম হবেন। এদের মধ্যে ৪ জন আমীর হামজার কাছে কালেমা পাঠ করেছেন আর বাকি ৬ জন আপনার কাছে বায়াত হতে চান। সেখানেও আমি অপারগতা জানাই। আমি রাজি না হলে উপস্থিত অন্য আলেমের কাছে ওই পরিবারটি মুসলাম হয়। কিন্তু মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয় লক্ষীপুরের একই পরিবারের ১১ হিন্দু মিজানুর রহমানের হাতে হাত রেখে ইসলাম গ্রহণ করেছেন।
এরপর আজহারী বলেন, পরদিন শুনি ওই পরিবারটি ভারতীয়। পরিবারের কর্তা মুসলমান ছিলেন কিন্তু ছোটবেলায় হারিয়ে ভারতে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে হিন্দু ধর্ম পালন করেছেন। বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী, সন্তানেরা সবাই হিন্দু। এ নিয়ে দেশজুড়ে অতি উৎসাহ দেখা দেয়। পরে শুনি সরকার তাদেরকে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে। আপনাদের এই অতি উৎসাহের জন্য এমনটা হয়েছে।
সম্প্রতি মৌলভীবাজারে এক মাহফিলেও এক বৌদ্ধ ইসলাম গ্রহণ করতে এলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন বলে জানান আজহারী। সেদিন প্রসিদ্ধ আলেম শাইখ জামান ভাইয়ের কাছে কালেমা পাঠ করে মুসলমান হন ওই বৌদ্ধ। কিন্তু মিডিয়ায় ওই বৌদ্ধকে তিনিই কালেমা পড়িয়েছে বলে খবর প্রকাশ হয়।
আজহারী মনে করেন, অন্য ধর্ম থেকে কেউ মুসলিম হতে আসলে তিনি কি কারণে ইসলাম গ্রহণ করতে চান, সেচ্ছায় সজ্ঞানে কিনা, তার ওপর কেউ চাপ সৃষ্টি করছে কিনা এসব যাচাই করবেন স্থানীয় চেয়ারম্যান। এরপর ওই ব্যক্তিকে নিয়ে স্থানীয় জুমার মসজিদে গিয়ে চেয়ারম্যান খতিবের কাছে কালেমা পাঠ করিয়ে তাকে ইসলামে দীক্ষিত করাবেন। আর এ সবই হবে রাষ্ট্রীয় আইন মেনে এফিডেভিট করে। ওই ব্যক্তির পছন্দ মতো ইসলামিক নাম রাখবেন।
চাঁদপুর টাইমস রিপোট