স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে গিনেস বুকে নাম লেখাতে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টার আগেই ১০.৪ কিলোমিটার সড়কজুড়ে আলপনা আঁকা শেষ করেছে গাইবান্ধার শিক্ষার্থীরা। মাত্র ২২ ঘণ্টায় বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা আঁকার মধ্য দিয়ে এবার গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে বাংলাদেশের নাম লেখার পালা।
বদলে গেছে গাইবান্ধা-সাঘাটা-বাদিয়াখালী সড়ক। সাত রঙে রাঙা পিচঢালা এই পথে চলতে গিয়ে অবাক পথচারীরাও। মাত্র ২২ ঘণ্টায় শিক্ষার্থীদের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় রং-তুলির আঁচড়ে দৃষ্টিনন্দন সড়কটি নজর কেড়েছে অনেকের।
সড়কেই নাওয়া-খাওয়া, সড়কেই বিশ্রাম। এমনিভাবে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে গোটা রাত পেরিয়ে পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত টানা ২২ ঘণ্টায় গাইবান্ধা শহর থেকে বাদিয়াখালী পর্যন্ত ১০.৪ কিলোমিটার সড়কে শেষ হয় আলপনা আঁকার কাজ। এবার বিশ্বের বুকে নতুন করে বাংলাদেশকে তুলে ধরার পালা। এ আলপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে নাম লেখাবে আশাবাদী গাইবান্ধাবাসী।
রেইনবো পেইন্টসের সহযোগিতায় দীর্ঘতম আলপনা উৎসবে ব্যবহার করা হয় ছয় হাজার লিটার রং। এ উৎসবের আয়োজন করে পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব গাইবান্ধার (পুসাগ) সদস্য শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, জেলা শহরের পুলিশ লাইনের সামনে থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি মেডিকেল কলেজ পড়ুয়া গাইবান্ধার শিক্ষার্থীদের সংগঠন পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব গাইবান্ধার (পুসাগ) শিল্পীরা দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আলপনা অংকন শুরু করে।
শিক্ষার্থীদের রং-তুলির আঁচরে আঁচরে গাইবান্ধা-সাঘাটা-বাদিয়াখালী সড়কজুড়েই সুদৃশ্য বর্ণিল আলপনাটি বিপুল মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় যখন সাঘাটার ভাঙামোড়ে গিয়ে পৌঁছায় তখন আলপনা উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান সরকার আতা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তারাও একপর্যায়ে রং-তুলি নিয়ে আলপনা আঁকায় অংশ নেন।
এ সময় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, গাইবান্ধার এই তরুণ শিক্ষার্থীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে তিনি অভিভূত।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, শুক্রবার নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বিশ্বের এই দীর্ঘতম আলপনা অংকনের কাজ সম্পন্ন হবে এবং এটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে বাংলাদেশকে ঠাঁই করে দেবে।
উদ্যোক্তাদের সূত্রে জানা গেছে, ১০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে আলপনা আঁকার সময়সীমা ইতোপূর্বে ২৪ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হলেও তারা মাত্র ২২ ঘণ্টা সময়ে ১০.৪ কিলোমিটার সড়কজুড়ে আলপনাটি আঁকতে সক্ষম হয়। নির্ধারিত দূরত্বে আলপনাটি আঁকা সম্পন্ন হওয়ার পর সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সড়কে ফিতা কেটে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন দীর্ঘতম এবং অপরিসীম শ্রমসাধ্য বর্ণিল এ সড়ক আলপনার সমাপনী টানেন।
তিনি প্রশংসনীয় কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে বিশ্বের দীর্ঘতম অংকিত সড়ক আলপনা হিসেবে এটি স্বীকৃতি পাবে।
আলপনা উৎসব অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুসেইন মো. জীম, সাধারণ সম্পাদক একে প্রামাণিক পার্থ প্রমুখ।
ঢাকা ব্যুরো চীফ,১৯ মার্চ ২০২১