ইসলাম

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস উপলক্ষে রবিবার যথাযথ ধর্মীয় মার্যাদার সাথে দেশে পালন করা হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। মানবতার মুক্তির বার্তা নিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার সৌদি আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। আবার ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি পরলোকগমন করেন।

দিনটি সরকারি ছুটির দিন। দেশের মুসলিমরা এ দিন বিশেষ ইবাদত করবেন। দিনটি উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল, আলোচনা ও কোরআন খতমসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, মসজিদ ও মাদ্রাসা।

এদিকে, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়ে দেশের জনগণ ও বিশ্বের মুসলমানদের ঈদে মিলাদুন্নবীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বর্বর আরব সমাজে তার আবির্ভাব বদলে দিয়েছিল গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে। মানবতার মুক্তির দূত হয়ে তিনি আরব সমাজের পাশাপাশি গোটা পৃথিবীর মানুষের জন্য নিয়ে এসেছিলেন শান্তির অমোঘ বার্তা।

মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)কে অন্য ধর্মাবলম্বী অনেকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী বিখ্যাত পণ্ডিত মাইকেল এইচ হার্ট তার বহুল আলোচিত ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে হযরত মুহম্মদ (সা.) কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্থান দিয়েছেন। সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ’ বলেছেন, এই অশান্ত পৃথিবীতে তাঁর মতো একজন মানুষের প্রয়োজন। তাঁর আগমনে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল দুনিয়াজুড়ে তা বিস্তৃত হয়েছে। মহানবী (সা.)কে বলা হয় সাইয়্যিদুল মুরসালিন। অর্থাৎ, সব নবী ও রাসুলের নেতা। তিনি নিখিল বিশ্বের নবী। তার জন্মের সময় আরব দেশ অশিক্ষা, অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও ঘোর তমসায় নিমজ্জিত ছিল। এ কারণে ওই সময়কে বলা হয় ‘আইয়্যামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকারের যুগ’। ওই বর্বর যুগে পৈশাচিক স্বভাবের কালিমাতে মানুষের মানবিক গুণাবলীর অপমৃত্যু ঘটেছিল। সে অবস্থা থেকে মানব জাতিকে মুক্তি দিতে মহান আল্লাহ্‌ হযরত মুহম্মদ (সা.)কে সর্বশেষ রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে পাঠান।

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছেন, ‘আমি আপনাকে সারা বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।’ মহান আল্লাহ্‌ পুরো মানবজাতির জন্য সর্বাপেক্ষা কল্যাণকর, পরিপূর্ণ জীবন-বিধান সংবলিত পবিত্রতম আসমানি কিতাব ‘আল-কোরআন’ নাজিল করেন মহানবী (সা.)-এর ওপর। প্রতিবছর ১২ই রবিউল আউয়ালকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে পালন করে মুসলিম বিশ্ব। বিশ্বজুড়ে পালিত হয় মিলাদ, জশনে জুলুসসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সা. উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে জগনে জুলুস (ধর্মীয় র‌্যালি) করবে বিভিন্ন সংগঠন। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রঙ্গিন ও কালেমা খচিত পতাকা দিয়ে শোভিত করা হয়েছে।

Share