ব্রিটিশ যুবরাজ উইলিয়াম হ্যারি-মেগান মার্কলের বিয়েতে আমন্ত্রণ পেয়ে এসেছিলেন দেশ-বিদেশের বহু নামীদামী তারকা অতিথি। তবে সকলকে ছাপিয়ে বোধ হয় একটি আমন্ত্রণের ভিন্ন মর্মার্থ আছে। যুবরাজের বিয়েতে দাওয়াত পেয়েছিলেন মুতসু। তিনি আফ্রিকার দেশ লেসোথোর বাসিন্দা।
আজ থেকে ১৪ বছর আগে প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। তখন মুতসু ছিলেন অনেক ছোট। এতিম। তখনই মুতসুর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় প্রিন্স হ্যারির। সেই মুতসু পোটসেইন বৃটিশ রাজপুত্রের বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিশেষ নজর কেড়েছেন। বিয়ে উপলক্ষে ১৮ বছর বয়সী এই যুবককে লেথসো থেকে বৃটেনে উড়িয়ে আনেন প্রিন্স হ্যারি। এমনকি যেসব অতিথি সবার আগে রাজকীয় দম্পত্তিকে শুভেচ্ছা জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মুতসু।
১৪ বছর আগে দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকান দেশ লেথসোতে মুতসু পোটসেইনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারির। তখন মুতসু ছিলেন ৪ বছর বয়সী শিশু। খুব দ্রুতই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। এতগুলো বছর তারা নিয়মিতই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন।
প্রিন্স হ্যারির দাতব্য সংস্থা সেন্টেবেইল থেকে যেই ১০ জন প্রতিনিধি বিয়েতে দাওয়াত পেয়েছেন, তাদের একজন মুতসু। প্রকৃতপক্ষে এই দাতব্য সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা হলেন তিনি। ২০০৬ সালে প্রিন্স হ্যারি ও মুতসু মিলে এই সংস্থা গড়ে তোলেন। সেন্টেবেইল শব্দের মানে হলো ‘আমাকে ভুলো না।’ স্থলবেষ্টিত লেথসোতে মরণব্যাধী এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত হাজার হাজার শিশু ও তরুণদের জন্য কাজ করে এই সংস্থা।
রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স সেইসো বলেন, ‘২০০৪ সালে প্রথম লেথসোতে যান তরুণ হ্যারি। আর এখন তিনি পূর্ণ যুবক। বিয়ে করছেন।’
প্রিন্স হ্যারির বিয়েতে আমন্ত্রিত ২৪৬০ জন ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার মোট ২০০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সেন্টেবেইল-এর চেয়ারম্যান জনি হর্নবি বলেন, নববিবাহিত দম্পত্তি যখন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে সেইন্ট জর্জ চ্যাপেন ত্যাগ করছিলেন তখন তাদেরকে যেই অতিথির দল প্রথমে শুভেচ্ছা জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ছিলেন মুতসু। তিনি আরও বলেন, মুতসু এখন কিছুটা লাজুক। তবে সে অনেক ভালো করছে। স্কুল শেষ করার পথে। প্রিন্স মুতসুকে একটি নীল ওয়েলিংটন বুট উপহার দেন। এই বুট পাওয়ার ইচ্ছা মুতসুর অনেকদিনের। এই বিয়ের আগে ২ বছর আগে আইটিভির একটি তথ্যচিত্রেও এই দুই বন্ধুর দেখা হয়। দেখার সঙ্গে সঙ্গে তারা দীর্ঘক্ষণ কোলাকুলি করেন। তখন হ্যারি বলেন, ‘তাকে এত খুশি দেখতে খুব ভালো লাগছে। আমাদের গাছ টিকে আছে। বড় হয়েছে। তার চারপাশে যেই বেষ্টনী দিয়েছি, সেটাও এখনও আছে।’