গাজায় ক্ষুধা পরিস্থিতি ভয়াবহ : হু
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুই সপ্তাহ পার হলেও ক্ষুধা ও অপুষ্টি পরিস্থিতি এখনও ভয়ঙ্কর অবস্থায় রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুক্রবার সতর্ক করেছে, গাজায় মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না।
ডব্লিউএইচও-এর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, “যা খাদ্য সামগ্রী ঢুকছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। তাই ক্ষুধার পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।”
আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো জানিয়েছেন, অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশের পথ সীমিত হওয়ায় খাদ্য সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানায়, তাদের লক্ষ্য ছিল প্রতিদিন দু’ হাজার টন ত্রাণ সরবরাহ করা, কিন্তু এখন গাজায় প্রতিদিন পৌঁছাচ্ছে মাত্র ৭ শ ৫০ টন। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে শুধু দুটি সীমিত প্রবেশপথ খোলা থাকা।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজার অন্তত এক-চতুর্থাংশ মানুষ, যার মধ্যে ১১ হাজার ৫শ গর্ভবতী নারী অন্তর্ভুক্ত, অনাহারে ভুগছেন। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, চলমান ক্ষুধা সংকট পুরো এক প্রজন্মের স্বাস্থ্য ও বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে।
ফিলিস্তিনি এনজিও পিএআরসি–এর পরিচালক বাহা জাকউত বলেন,“যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ পরও গাজার মানুষের জীবনযাত্রা ভয়াবহ। বাণিজ্যিক ট্রাকে বিস্কুট, চকলেট ও কোমল পানীয় ঢুকতে পারছে, কিন্তু পুষ্টিকর খাদ্য যেমন বীজ, জলপাই বা ফল–সবজি সীমিত ও ব্যয়বহুল।”
তারপরও বাজারে কিছু সবজি ও ফল পাওয়া গেলেও দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, এক কেজি টমেটোর দাম বেড়ে ১ শেকেল থেকে ১৫ শেকেল (৪.৫০ ডলার) হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে ৪১টি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যার মধ্যে অক্সফাম ও নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল রয়েছে, এক খোলা চিঠিতে অভিযোগ করেছে, “ইসরাইল নির্বিচারে ত্রাণবাহী চালান আটকে দিচ্ছে, যা মানবিক সংকট আরও গভীর করছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য সহায়তা সংস্থাগুলো এখনই দৃঢ় পদক্ষেপ এবং অবাধ ত্রাণ প্রবেশের আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে গাজার মানুষ জরুরি খাদ্য ও পুষ্টি পেতে পারে।
২৪ অক্টোবর ২০২৫
এ জি