চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নে ভাসমান ভিক্ষুক ও হিজড়াদের তৎপরতা ব্যাপক হারে বেড়েছে। ভিক্ষুকদের চাহিদার পরিমাণ না থাকলেও যারা হিজড়া তারা দলবেঁধে কিংবা দুই-তিনজনে গ্রুপ করে পৌর এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে হাজির হচ্ছে। এছাড়া গায়ে হলুদ, জন্মদিন, আকিকাসহ সামাজিক নানা আচার অনুষ্ঠানে হঠাৎ এরা হাজির হয়ে চাঁদাবাজি করছে।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় হিজড়াদের সংখ্যা প্রায় ১২ জন। যাদের বেশিরভাগই ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাইরের বলে জানা যায়। আর ভিক্ষুকের সংখ্যা শুধু প্রায় ১৩০ জন।
পাটওয়ারী বাজার ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, করোনার কারণে এমনিতেই ব্যবসা বাণিজ্য খারাপ যাচ্ছে সেখানে হিজড়াদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে বেচা-বিক্রি হোক বা না হোক, ক্যাশে টাকা থাকুক বা না থাকুক, হিজড়াদের দাবিকৃত চাঁদা থেকে নিস্তার নেই।
মেহেদী হাছান নামের এক শিক্ষক জানান, হিজড়াদের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আর বেঁচে থাকতে হলে খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। তবে তাদের মনগড়া দাবি বেদনাদায়ক। অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে তারা হাটে-ঘাটে, বাসা-বাড়িতে চাঁদা তুলে থাকে। সরকার এবং বিভিন্ন এনজিও হিজড়াদের নিয়ে কাজ করছে। তারপরও কেন তারা সাপ্তাহিক, মাসিক চাঁদা উঠাচ্ছে বুঝতে পারছি না।
মিজানুর রহমান নামক এক জানান, আমার মেয়ের বিবাহের অনুষ্ঠানে দুইজন হিজড়া এসে তারা ৫ হাজার টাকা দাবী করে। দিতে অপারগতা জানালে তারা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন ছাড়াও অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে। পরে স্থানীয়দের সহাযোগীতায় ১ হাজার টাকা দিলে তারা স্থান ত্যাগ করে।
এ ছাড়াও আবু জাফর নামে একব্যক্তি তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। হিজড়াদের উৎপাতে ফরিদগঞ্জবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাছান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমরা তাদের মূলধারায় নিয়ে আসতে চাচ্ছি। সেক্ষেত্রে প্রথমত তাদের পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্র ও সকল ক্ষেত্রে তাদেরকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে এবং কোন প্রকার বৈষম্যতা করা যাবে না। পাশাপাশি তাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।’
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১