হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ১২টি গ্রেনেড ব্যবহার করা হয় : আদালতে মহিউদ্দীন খান আলমগীর

‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ১২টি গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়। আদালতে এমন সাক্ষ্য দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগনেতা মহিউদ্দীন খান আলমগীর।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিনের আদালতে সোমবার আংশিক সাক্ষ্য প্রদান করেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের এই নেতা। তার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৮ জানুয়ারির দিন ধার্য করেন আদালত।

তিনি সাক্ষ্যতে আরও বলেন, ‘২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে পুলিশকে নিরাপত্তা দিতে আমি দেখিনি। শুধু তাই নয়, আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, ঘটনার পর পুলিশ সংঘবদ্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

তিনি বলেন, ‘২১ আগস্টে যেসব গ্রেনেড বিস্ফোরণ করা হয়েছে তা দেশি কোনো গ্রেনেড নয়। এসব গ্রেনেড সেনাবাহিনী ব্যবহার করে। চট্টগ্রামে উদ্ধার হওয়া ১০ ট্রাক অস্ত্র থেকে এসব গ্রেনেড নেওয়া হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা সহকারী শোয়েব।

মামলায় ৪৯১ সাক্ষীর মধ্যে ২০৬ জন বিভিন্ন সময় সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড হামলা চালায়। ভয়াবহ ওই হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।

২০০৮ সালের ১১ জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

২০০৮ সলের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০০৯ সালের ৯ জুন পর্যন্ত ৬১ জনের সাক্ষ্য নেন ট্রাইব্যুনাল। ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলাটি তদন্তের ভার পান সিআইডির পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আখন্দ। তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি অভিযোগপত্র দেন।

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২৫ আসামি কারাগারে আটক আছেন।

মামলার ৫২ আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার ভাগনে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আশরাফুল হুদা, পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল হক, খোদা বক্স চৌধুরী ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুর রহমানসহ আটজন জামিনে আছেন।

অন্যদিকে, বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপিনেতা কাজী মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৮ আসামি পলাতক আছেন।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে এ মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৪:২৯ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৬, সোমবার

এমআরআর  

Share