চাঁদপুর

চাঁদপুর হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ইতিহাস

চাঁদপুর শহরে অবস্থিত হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি দীর্ঘ ১৩১ বছর যাবত্ শিক্ষার আলো বিস্তারে এক অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে।

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত কাঞ্চনপুর গ্রামের চৌধুরীবাড়ির নিঃসন্তান জমিদার হাসান আলী সাহেবের দান করা প্রায় এক একর জমির উপর তারই নিজ খরচে নির্মাণ করা হয় একটি লাল দ্বিতল ভবন। এই ভবনটিতেই ১৮৮৫ সালে চালু করা হয় তত্কালীন চাঁদপুর মহকুমার ইংরেজি শিক্ষার একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় ইংল্যান্ডের মহারাণী ভিক্টোরিয়ার ‘সিলভার জুবিলি’ সারা ভারতবর্ষে ধূমধামে পালিত হচ্ছিল। তাই এ উত্সবকে স্মরণীয় করে রাখতে বিদ্যালয়টির নামের সঙ্গে ‘জুবিলি’ শব্দটি জুড়ে দেয়া হয়। ফলে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় ‘চাঁদপুর হাসান আলী জুবিলি হাইস্কুল’।

কালের পরিক্রমায় ‘জুবিলি’ শব্দটি বাদ দিয়ে বর্তমান নাম হয় হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।

১৯৬৯ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হয়। আস্তে আস্তে এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং দূর-দূরান্ত থেকেও শিক্ষার্থীদের এসে থাকতে অসুবিধা হয় চিন্তা করে চাঁদপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী রূপসার জমিদার মরহুম আহমদ রাজা চৌধুরী স্কুলের দক্ষিণ দিকে মুসলিম ছাত্রদের জন্য হোস্টেলের জন্য ভূমি দান করেন।

এখন চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ নামে যে কলেজটি দাঁড়িয়ে আছে এটি সেই মুসলিম হোস্টেলের জায়গার উপর পরিচালিত হচ্ছে।

অপরদিকে এ স্কুলের অদূরে স্থানীয় জোড়পুকুর পাড়ে নবকান্ত মুখোপাধ্যায় হিন্দু ছাত্রদের জন্য একটি হোস্টেল নির্মাণ করে দেন। এটির নাম দেয়া হয় বেইলী হিন্দু ছাত্রাবাস। ছাত্রাবাসটি এখনও এই স্কুলের নামেই পরিচালিত হচ্ছে।

এ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের জন্য স্কুলের কাছেই মজুমদার বাবুরা নামমাত্র মূল্যে এক একর ৩০ শতাংশ জমি বিক্রি করে দেন। বর্তমানে এই মাঠটির উত্তর পাশে হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। বাকি অংশটুকু খেলার মাঠ হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে।

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে লাল দ্বিতল ভবনে পরিচালিত হলেও কালের পরিক্রমায় ভবনটি ভগ্নদশায় পরিণত হয়। তাই সময়ের চাহিদা মেটাতে মূল ভবনটি ভেঙে ১৯৮৮ সালে নতুন দ্বিতল ও ত্রিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এসব ভবনেই দুই শিফটে ক্লাস হচ্ছে। বর্তমানে স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ২৫৬ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৪৭ জন।

বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো.গিয়াসউদ্দিন পাটওয়ারী জানান, শিক্ষার্থী অনুযায়ী প্রয়োজনীয় একাডেমিক ভবন নেই, একটি অডিটরিয়াম নেই, খেলার মাঠে সীমানা প্রাচীর নেই, সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকার কথা দু’জন। কিন্তু দুটি পদই শূন্য পড়ে আছে, সহকারী শিক্ষকের তিনটি পদ শূন্য পড়ে আছে। তার উপর আবার কয়েকজন শিক্ষককে অন্যত্র দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থাকার কথা ১৪ জন আছেন ছয়জন।

এছাড়া বিদ্যালয়ের জন্য যে সমস্ত সম্পত্তি থাকার কথা তার বেশ কিছু বেহাত হয়ে রয়েছে। এগুলো উদ্ধার করা যাচ্ছে না।

নিউজ ডেস্ক
।। আপডটে,বাংলাদশে সময় ১০ : ৩৭ পিএম, ০৩ মার্চ ২০১৭ শুক্রবার

এইউ

Share