ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে সহপাঠীদের দেয়া পেট্রল ঢেলে আগুনে দগ্ধ মাদরাসাছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
শনিবার(৬ এপ্রিল) বেলা ৩টার দিকে ওই ছাত্রীর ভাই রাশেদুল হাসানসহ চার-পাঁচজন তাকে ঢামেকে ভর্তি করেন। ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে তাকে বার্ন ইউনিটের ইমার্জেন্সি ওটি (ওপারেশন থিয়েটার) ঢোকানো হয়েছে।
ঢামেক ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া তথ্যটি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওই ছাত্রীর মুখমণ্ডল বাদে পুরো শরীর পুড়ে গেছে।
এর আগে আজ (শনিবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে ওই ছাত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। দগ্ধ ছাত্রীর বাড়ি সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া গ্রামে। তিনি আলিম পরীক্ষার্থী।
দগ্ধ ছাত্রীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘আমার বোন সকালে আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যায়। তাকে ফুঁসলিয়ে অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রিত কয়েকজন শিক্ষার্থী মাদরাসার ছাদে নিয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান।’
ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু তাহের জানান, ছাত্রীর শরীরের ৭০-৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢামেকে পাঠানো হয়।
সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এর আগে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয় হবে।
গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।
অন্যদিকে আরেকটি অংশ তার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
(জাগো নিউজ)
বার্তা কক্ষ
৬ এপ্রিল,২০১৯
