ফরিদগঞ্জ

তিন দফা জানাযা শেষে সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের দাফন সম্পন্ন

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মুন্সীর তিন দফা জানাযা শেষে রোববার (৪ ডিসেম্বর) তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীরহাট বাজারে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

১৯৭৩ সন থেকে একটানা ১৮ বৎসর ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জনকারী হাবিবুর রহমান মুন্সী মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৫ ছেলে, ৫ মেয়ে নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান।

শনিবার দিবাগত রাত ২.১৫ মিনিটের সময় চাঁদপুর শহরের নিজ বাসায় বার্ধক্য জনিত কারনে ইন্তেকাল করেন।

মৃতুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। মরহুম আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান এক বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

মরহুমের ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ গ্রাম সাচনমেঘে নিজের প্রতিষ্ঠিত মুন্সীরহাট আই. এইচ. ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে সকাল ১১টায় ২য় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাযায় ইমামতি করেন মুন্সীরহাট আই. এইচ. ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মো. মোরশেদ আলম।

মরহুমের প্রথম জানাযা চাঁদপুরের বাইতুল আমান জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়।

৩য় ও শেষ জানাযা অনুষ্ঠিত হয় ২.২৫ মিনিটে মুন্সীরহাট জি এন্ড এ আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। এখানে ইমামমতি করেন মাদ্রাসার সাবেক উপাধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাও. সিদ্দিকুর রহমান।

জানাযার প্রাক্কালে মরহুমের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন, ফরিদগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী, মরহুমের বড় ছেলে আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান (টিটু) মুন্সী, মুন্সীরহাট জি এন্ড এ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামছুল আমিন, মুন্সীরহাট আই. এইচ. ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ- আলহাজ্ব মাওলানা মো. মোরশেদ আলম, কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসার প্রভাষক আলহাজ্ব সাঈদুুর রহমান, আলহাজ্ব এ এইচ এম আহমদ উল্লাহ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক জসিম উদ্দিন মিন্টু, শফিউল আলম শুকু পাটওয়ারী।

মরহুম হাবিবুর রহমান মুন্সী ১৯৫৫ইং সনে চাঁদপুরের ডি এন স্কুল হতে এস.এস.সি পাশ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। কর্ম জীবনের প্রথমে চাঁদপুরের ডব্লিউ রহমান জুট মিলে, পরে চট্টগ্রামসহ ১৯৭১ইং সন পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি আর চাকরি না করে নিজ এলাকায় সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নে ব্যবসা শুরু করেন।

প্রথম দিকে বিভিন্ন ব্যবসা করলেও পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে ইটভাটার ব্যবসা শুরু করেন। এবং একে একে নিজের এলাকায় ৩টি ইটের ভাটা তৈরি করে ছেলেদেরকে পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায় তিনি ১৯৭৩ইং সন হতে একটানা ১৮ বৎসর সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। চেয়ারম্যান হিসাবে একজন সু-প্রশাসক হিসাবে আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি লাভ করেন।

তিনি ১৯৮৫ইং সন হতে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত মুন্সীরহাট জি এন্ড এ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ছিলেন একজন ধর্মভীরু মানুষ, ব্যক্তি জীবনে তিনি ১৮ বার পবিত্র হজ্ব পালন করেন।

অত্যন্ত ধার্মিক আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান ১৯৮৪ইং সনে নিজস্ব অর্থায়নে নিজের ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত মুন্সীরহাট আইএইচ ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার দিন হতে শুরু করে তাঁর মৃত্যুর দিন পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

ফরিদগঞ্জ থেকে এবি সিদ্দিক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯:৪০ পিএম, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

Share