হাজীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মডেল ঘোষণার পর থেকেই বেড়েছে সেবার মান

সরকার সারাদেশে প্রতিটি জেলায় একটি করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’কে মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘোষণার অংশ হিসাবে ‘হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ জেলার মডেল হিসাবে মনোনীত হয়। চাঁদপুরের ৮টি উপজেলার মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সকে ‘মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ হিসেবে ঘোষণা করায় ইতিমধ্যে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা, সেই সাথে বেড়েছে সেবার মান। কিন্তু রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী বাড়েনী বেডিং ব্যবস্থা। তাই বর্তমানে ৫০ শয্যা বেড়ে ১০০ শয্যা উন্নতি করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৃষ্টি কামনা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী।

সেবার মধ্যে এএনসি ও পিএনসি সেবা, নরমাল ডেলিভারি ও সিজারিয়ান কার্যক্রম সেবা, প্যাথলজিক্যাল সেবা, আউটডোর ও ইনডোর সেবা, এনসিডিসি সেবা, সর্বপরি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মদক্ষতা, কাজের গুণগত মান পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেকে ‘মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ হিসেবে ঘোষণা করে। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএসও ডা. মো. গোলাম মাওলা ও আরএমও ডা. মো. জামাল উদ্দিনের অক্লান্ত মেধা পরিশ্রমের কারনে। কারন দুইজনই ২০২১ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর বেড়েছে স্বাস্থ্য সেবার মান।

হাসপাতাল সৃত্রে জানাযায়, প্রতিমাসে গড়ে ১৮ থেকে ২০ হাজার রোগি চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। এর মধ্যে উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের পাশপাশি পাশ্বর্বর্তী উপজেলা কচুয়া, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, মতলব ও লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার একাংশের জনগণকে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসকরা।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবাগ্রহীতার মধ্যে থেকে দৈনিক গড়ে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি থাকে। আর প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৫০০/৬০০ রোগী একং জরুরি বিভাগে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগি চিকিৎসা সেবা নেন। এছাড়া এনসিডিসি কর্নার চালু হওয়ায় ডায়াবেটিক, কিডনি, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপসহ অসংক্রামক রোগিদের ভিড় বাড়ছে।

এসব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে প্রতিনিয়ত চলছে এএনসি ও পিএনসি সেবা, নরমাল ডেলিভারি, প্যাথলজিক্যাল সেবা, আউটডোর ও ইনডোর সেবা, এনসিডিসি সেবা কার্যক্রম। যে কারনে বেড়েছে সেবার মান ও রোগীর সংখ্যা।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী মানিক হোসেন, সাইফুল ও মাজুদা বেগম বলেন, আমাগো এই হাসপাতালের সেবা আগের থেকে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এসে সত্যিই আনন্দিত খুশি এবং ডাক্তারের কথা বার্তা ও ওষুধপত্র পেয়ে অনেক আনন্দিত। এজন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই তিনি আমাদের স্বাস্থ্য সেবা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. জামাল উদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত সব চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফ, টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, এমটি ইপিআই, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, পরিসংখ্যানবিদ, স্বাস্থ্য সহকারী সহ সবাই স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে একমত হয়ে কাজ শুরু করি। তার পর নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করে এনসিডিসি, নরমাল ডেলিভারি, প্যাথলজিক্যাল সেবা চালু করা হয়। তাছাড়া নানান ক্ষুদ্র ও জটিল সমস্যার সমাধান করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মাওলা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, মডেল কমপ্লেক্সে সুবিধা পেয়ে ইতোমধ্যে চাহিদার প্রয়োজনীয় কিছু যন্ত্রপাতির পেয়ে কাজ করেছি। আমরা চাই মডেল কমপ্লেক্সে হিসাবে পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি সেবার মান বৃদ্ধি করতে। আমরা সবাই মিলে যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি, তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে আরো যাবে। যা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেকটা এগিয়েছে। বর্তমানে এ মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যা বেড়ে ১০০ শয্যা উন্নতি করা হলে আর তেমন কোন সমস্যা থাকছেনা।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ৫ এপ্রিল ২০২৩

Share