হাজীগঞ্জ স্পিনিং জুট মিলটি বারবার চালু করেও সচল রাখা যাচ্ছে না। কিছু দিন চালুর পর আবার ধার দেনার কারনে বন্ধ হয়ে যায়। আর এতে করে মিলে কর্মরত ৪শ’ শ্রমিক বেকার জীবনযাপন করে আসছে। এসব শ্রমিক বেশির ভাগই স্থানীয় হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য। যাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ছিলো অত্র জুট মিল। মিলটি বন্ধ থাকায় এসব পরিবার বর্তমানে অনাহারে ভুগছে।
জানা যায়, অর্থাভাব ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার অজুহাতে বর্তমানে মিলটি বন্ধ রয়েছে। অথচ মিলটি চালুর নামে বহুবার বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋন নিয়ে আর কোন খবর কতৃপক্ষের নেই বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বর্তমানেও চুক্তিভিত্তিক বেতনে ৮-১০ জন গার্ড দিন রাত মিলটি পাহারা দিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার টোরাগড় এলাকায় স্পিনিং জুট মিলটি অগ্রনী ব্যাংক হাজীগঞ্জ শাখা থেকে নিলামে নেয় সাবেক এমপি এম এ মতিনের জামাই স্থানীয় জনৈক লিল্পপতি। নিলামে নেওয়ার পর কিছু দিন চালু থাকার পর আবার বন্ধ হয়ে যায়। এর কয়েক বছর পর জনৈক আরেক ব্যক্তি মিলটি চালু করে সেও কিছু দিন চালু রেখে বিভিন্ন কারনে বন্ধ করে দেয়।
এভাবে বন্ধ অবস্থায় পুনরায় সালাউদ্দিন ও রনি নামের দু ব্যবসায়ী দেড় লক্ষ টাকা ভাড়ায় মিলটি চালাতে গিয়ে শ্রমিকের বেতন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে আবার বন্ধ করে দেয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে না পারায় কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। আর এতে করে উক্ত মিলের প্রায় ৪শ’ শ্রমিক বেকার অবস্থায় জীবনযাপন করে আসছে বলে জানা যায়।
বর্তমানে মিলটির গার্ডদের প্রধান মোস্তফা কামাল জানান, অর্থাভাব ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় হাজীগঞ্জ স্পিনিং মিলটি বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চালু করতে হলে বিদ্যুৎ বিভাগে অগ্রিম ১৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। সেই সাথে শ্রমিকদের দেনা শোধ করতে হবে। অথচ এ মিলটিতে এক সময় পাটের সুতা, ষ্কপ, পিজিশন তৈরি হচ্ছিল। বাজারেও এর ব্যাপক চাহিদা ছিল। পাঠ ব্যবসায়ীরা পাট বাকীতে না দেয়ার ফলে মিলটি বন্ধের পথে চলে যায়।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে হাজীগঞ্জের টোরাগড় এলাকায় ১৭ একর জমির ওপর হামিদিয়া জুট মিল নামে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে অগ্রনী ব্যাংক হাজীগঞ্জ শাখার কাছে দায়বন্ধ থাকার পর ২০০১ সালে পুণরায় হাজীগঞ্জ স্পিনিং জুট মিল নামে চালু হয়। বিভিন্ন কারনে পাটজাত দ্রব্যের বাজার আর্ন্তজাতিক ভাবে হ্রাস পাওয়ায় উক্ত মিলটি ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিবেদক : জহিরুল ইসলাম জয়