হাজীগঞ্জ পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সাদেকুজ্জামান মুন্সী সাম্প্রতিক বিষয় তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন। ৫ মার্চ পৌর ভবনের কাউন্সিলর কার্যালয়ে সাংবাদিক মহিউদ্দিন আল আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সাদেকুজ্জামান মুন্সী বলেন, গত রবিবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে আমাকে জড়িয়ে ২টি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করি। আমি উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সংবাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আপনাদের মাধ্যমে সর্ব-সাধারনের উদ্দেশ্যে তুলে ধরছি।
তিনি বলেন, কিছুদিন পূর্বে আমার ওয়ার্ডের ১২ জন লেবার (শ্রমিক) ৫’শ টাকা হাজিরার বিনিময়ে সরকারি আদেশপ্রাপ্ত একটি উচ্ছেদ অভিযানে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাদেরকে আটক করলে, ওই ১২ জন লেবারের পরিবারের সদস্যরা সহযোগীতার জন্য আমার কাছে ছুটে আসে। আমি কাউন্সিলর হিসাবে তাদের সাথে কথা বলি। অথচ কুচক্রীমহল ওই ১২ জন লেবারকে আমার বাহিনীর সদস্য বলে লোকমুখে ছড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, সংবাদের থার্মেলে উল্লেখ করা হয়েছে, কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়। অথচ কাউন্সিলর হিসাবে গত তিন বছর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে আমার বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ নেই। এছাড়াও আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে টর্চার সেল বলা হয়েছে। অথচ প্রতিষ্ঠানে আমার আত্মরক্ষার জন্য একটি লাঠিও খুঁজে পাবেনা না এবং আমার অফিসে আমি আজ পর্যন্ত কাউকে মেরেছি এমন কোন রেকর্ড নেই।
তিনি আরও বলেন, বলা হয়েছে, আমি নাকি জায়গা দখল, মাদক ও জুয়ার সাথে জড়িত। এ বিষয়ে আপনারা অনুসন্ধান করে দেখুন, আমি অবৈধভাবে কারো কোন জায়গা দখল করেছি বা দখল রেখেছি কিনা? যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন আমি দেশের আইন অনুযায়ী যে শাস্তি রয়েছে, তা মাথা পেতে নিব। প্রকৃতপক্ষে আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাদক, জুয়া, বাল্যবিবাহ ও কিশোর গ্যাং নির্মূলে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করছি।
সাদেকুজামান মুন্সী বলেন, মজিবুর রহমান রনি ও রাজন চৌধুরী নামক একটি প্রতারকচক্র আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ এবং এডিটিং করা একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেছে। এতে আমি সামাজিকভাবে আমার আত্মমর্যাদা ও ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষর্ণ হয়েছে।
বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মজিবুর রহমান রনি গং তাদের আপন চাচা ফারুক মিয়ার নামে আদালতে ত্রিশ লাখ টাকা চাঁদাবাজির একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত হাজীগঞ্জ পৌরসভার মাধ্যমে ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চায়। তারা চেয়েছিল, আমি মামলার অভিযোগ সত্য বলে প্রতিবেদন দেই। কিন্তু আমি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ চাঁদাবাজির প্রমাণ পাইনি। এই মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দেই। এতে ক্ষুদ্ধ হয় তারা। ।
তিনি আরও বলেন, রাজন এলাকায় অসংখ্য মানুষের সাথে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হানিয়ে নিয়েছে। তাদের হাতিয়ার হচ্ছে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মানুষকে সর্বশান্ত করা। এই মর্মে আমার কাছে একাধিক মানুষ অবগত করে। এ বিষয়ে আমি কথা বলার পর মজিবুর রহমান রনি ও রাজন গংরা আমার বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদের মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য দেয়। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমি।
কাউন্সিলরের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিক মজিবুর রহমান রনির সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি তাঁর (কাউন্সিলর) বিরুদ্ধে নিউজ করিয়েছি, এর সত্যতা পেলে আপনারা (সংবাদকর্মী) যে শাস্তি দিবেন, তা মাথা পেতে নিব। আর যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে আমার মানহানির জন্য আমি তাঁর বিচার চাই।
এসময় হাজীগঞ্জ উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ৫ মার্চ ২০২৪