হাজীগঞ্জ

সভাপতির মেয়ের খাতায় নাম্বার কম ইস্যুতে হাজীগঞ্জ সপ্রাবিতে হট্রগোল

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯৫ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় সভাপতির মেয়ের খাতায় নাম্বার কম দেয়া ইস্যুতে ফলাফল ঘোষণা বন্ধ রাখায় হট্রগোল সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক যোগে প্রথম থেকে ৪র্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এ উপলক্ষে সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ফলাফল নেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ে ভিড় জমায়।

নির্ধারিত সময়ে প্রথম দ্বিতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহিনুর বেগম ৩য় শ্রেণির ফলাফল ঘোষণা করেনি। এ নিয়ে অভিভাবকদের সাথে একমত হয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আ. আউয়াল চৌধুরী প্রধান শিক্ষককের কাছে কারণ জানতে চাইলে বের হয়ে আসে স্নানুযুদ্ধের মতো কিছু ঘটনা।

বিস্তারিত তথ্য নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সভাপতির মেয়ে তয় শ্রেণীর ছাত্রী সামিয়া সুমাইয়া’র ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সায়মা নূর পরীক্ষার খাতায় বেশি নাম্বার দিয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষক ওই ছাত্রীর নাম্বারের বিষয়ে অন্য অভিভাবকদের অভিযোগ আছে বলে সহকারী শিক্ষক সায়মা নূরের কাছ থেকে ওই ছাত্রীর পরীক্ষার খাতা নিয়ে যান এবং নাম্বার কমিয়ে দেন।

সভাপতির সাথে মনোমালিন্য থাকায় তার মেয়ের পরীক্ষার খাতায় দেখে অর্ধেক নাম্বার কমিয়ে দেয়ার অভিযোগে সভাপতি বিষয়টি প্রধান শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় তিনি উত্তর না দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আক্তার হোসেন ও থানা অফিসার ইনচার্জকে ফোন দিয়ে বলেন তাকে ‘বিদ্যালয়ের হল রুমে অবরুদ্ধ করা হয়েছে’।

এ খবর শুনে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক এস আই জয়নাল আবেদিন ঘটনাস্থল থেকে প্রধান শিক্ষিকা শাহীনুর বেগমকে উপজেলায় নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সায়মা নূর বলেন, ‘আমি সভাপতি’র মেয়ে হিসাবে নয় তার লেখার মানের উপর নাম্বার দিয়েছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক জোরপূর্বক আমার বাহিরে নাম্বার বিয়োজন করেছে।’

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আ. আউয়াল চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক নিজ ক্ষমতা বলে যা ইচ্ছা তা করছে। আমার মেয়ের নাম্বার কেটেছে তাতে নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু তাই বলে ৩য় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ফলাফল ঘোষণা না করে তিনি হট্রগোল সৃষ্টি করেছে যা আমি এসে বাধাঁ দিয়েছি। এমনকি জেলা পরিষদের সদস্য আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন ও মেজর অব.রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি স্যার’কে কটাক্ষ করে বক্তব্য রেখেছে যার প্রতিবাদ আমি করেছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহিনুর বেগম বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিসের সাথে যোগাযোগ করে আমি ৩য় শ্রেণীর ফলাফল ঘোষনা করিনি। তারা অন্যায় ভাবে আমাকে অবরুদ্ধ করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করেছে।’
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি অভিযোগ পেয়ে বলেছি উপজেলা ফলাফলের কাগজসহ উক্ত খাতা নিয়ে আসার জন্য। এর মধ্যে কি হয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখছি।’

প্রতিবেদক- জহিরুল ইসলাম জয়
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:০০ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share