চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে নিয়োজিত রয়েছে ১৫/১৬ জন ট্রাফিক পুলিশ। চাঁদপুর কুমিল্লা, কচুয়া রামগঞ্জ সড়কের যানবাহন চলাচলে কিছুটা হলেও প্রতিনিহিত জ্যামে পড়তে হয় হাজীগঞ্জ বাজারে প্রবেশ করলে। যে কারনে এ ব্যস্তময় বাজারে এতো ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত থাকে। ঝড়, বৃষ্টি, রোদের মাঝেই দেখা যায় তাদের চলমান ডিউটি।
গত কয়েকদিন ধরে চলমান দাবদাহের মধ্যে প্রচন্ড রোদের মাঝে হাজীগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশ সড়কের উপর দাড়িয়ে ডিউটি করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা হয় এমন একজন হচ্ছে ট্রাফিক কনস্টেবল শাহআলম। তিনি বলেন, রোদ-বৃষ্টি বলে কোনো কথা নেই। বাংলাদেশ পুলিশে চাকরি করি, এটা আমার কর্তব্য। এখন যদি বলি, রোদে অসুবিধা হবে তাহলে তো আর দায়িত্ব পালন করা যাবে না। এখন রাস্তা ছেড়ে দিলেই ১০ মিনিটের মধ্যে গাড়ির জ্যাম লেগে যাবে। তখন তো শতশত মানুষের অসুবিধা হবে আমার জন্য। ফলে রোদ-বৃষ্টি যাই হোক না কেন, দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরেক ট্রাফিক কনস্টেবল রাকিবুল ইসলাম বলেন, এ তীব্র দাবদাহে ৮/১০টা মানুষের মতো আমারও কষ্ট হয়। তবে সেটা দায়িত্বের তুলনায় বেশি না। এটা আমরা হাসি মুখেই করে থাকি। এখন গরমের সময় আমাদের সাবধানে থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। স্যালাইন-পানি খাচ্ছি নিয়মিত। এভাবেই চলছে আমাদের ডিউটি।
হাজীগঞ্জ থানার টিআই বোরহান উদ্দিন বলেন, আমাদের যে সব সদস্য মাঠপর্যায়ে কাজ করেন, তারা অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে কাজ করছেন। বাইরে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা আসলেই কঠিন। আমাদের সার্জেন্টরাও ডিউটি করছেন। সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ২ পর্যন্ত আমাদের যে ডিউটি থাকে, এই সময় পর্যন্ত প্রচণ্ড হিট থাকে। এর মধ্যে যদি সবাই একসঙ্গে ডিউটিতে দাঁড়ায় তাহলে বেশিক্ষণ ডিউটি করতে পারবে না। এজন্য বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে ডিউটি করতে বলা হয়েছে।
রোদে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে এ অফিসার আরো বলেন, চাঁদপুরের সুযোগ্য পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম পিপিএম বার স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী যদি আমাদের কোন লোক অসুস্থতা অনুভব করেন তাহলে আশপাশে যেসব হাসপাতাল রয়েছে সেখানে দ্রুত নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যদিও আমাদের এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা প্ল্যান করেই রেখেছি, যদি কেউ অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে যেন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। সে জন্য হাজীগঞ্জ সার্কেল অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রংকজ কুমার স্যার ইতিমধ্যে খাবার স্যালাইনের ব্যবস্থা করে দেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জের সার্কেল অফিসার প্রংকজ কুমার দে জানান, চাঁদপুর কুমিল্লা সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান হচ্ছে হাজীগঞ্জ বাজার। যে কারণে এখানে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ প্রতিনিহিত কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে তাদেরকে বলেছি দাবদাহে যেন সড়কের পাশে মার্কেটের ছায়ায় থেকে ডিউটি করে এবং প্রচুর পরিমাণ পানি এবং সেলাইন খাওয়ার জন্য বলেছি।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur