চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে গত প্রায় ৫ বছর ধরে চলে আসছে কাঁঠালী চিলড্রেন পার্ক এন্ড কাবাব হাউজ। যেখানে রয়েছে অনুমোদনহীন কিছু দেশী বিদেশী বন্যপ্রাণী। ভিতরের শিশুদের জন্য কিছু খেলার রেডস থাকলে প্রবেশ মূল্য ও খাবারের দাম রাখছেন দিগুণ।
এর মাঝে পার্কের দুপাশে নির্জন পরিবেশ গড়ে তোলায় প্ররকীয়া জুটিসহ ও স্কুল-কলেজে পড়ুয়া প্রেমিক প্রেমিকাদের যেন মিলন মেলা। উপজেলা শহরের পাশে হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কের কাঁঠালী চিলড্রেন পার্কে এমন নানা অনিয়ম থাকলেও যেন প্রশাসনের তেমন নজরে নেই। যে কারণে পার্ক কর্তৃপক্ষ এর পরিধি বিস্তারের পাশাপাশি অনিয়মের মাত্রা বাড়াতে পেরেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
জানা যায়, কাঁঠালী চিলেন্ড পার্কটির মালিক মৃত হাজী সুলতান মুন্সীর ছেলে হাফিজুর রহমান।
পার্কটি গড়ে উঠেছে মাত্র একটি ইউনিয়ন পরিষদের ব্যবসায়ীক ট্রেড লাইসেন্স ধারা। অথচ এর ভিতরে বাকি রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর, বন্যপ্রাণী, পাখি অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরে লাইসেন্স।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাঁঠালী চিলেন্ড পার্কে প্রবেশ করতে টিকেট প্রতি দর্শনার্থীদের কাছ থেকে রাখে ২০ টাকা করে। ভিতরে নৌকা, চর্কি উঠতে জন প্রতি নেওয়া হয় ৫০ টাকা করে। এর মাঝে পার্কের পশ্চিম ও পূৃর্ব পাশে কিছু দুরে তাকালে চোখে পড়ে বিভিন্ন উঠতি বয়সের যুবক-যুবতী পাশাপাশি বসে অসামাজিক কার্যকালাপে লিপ্ত রয়েছে।
পার্কের দ্বিতীয় তলায় কাবাব হাউজে দর্শনার্থীরা খাবার খেয়ে হচ্ছেন প্রতারিত। বার্গার, লুচি, কাবাব থেকে শুরু করে যেসকল খাবার রয়েছে দামের তুলনায় খাবারের মান যথেষ্ট নয় বলে ওমর ফারুক, রুবেল, মনির হোসেনসহ কয়েকজন দর্শনার্থী অভিযোগ করেন।
এছাড়া পার্কের খাচায় বন্ধী রয়েছে বাজিগর, বানর, ঘুঘু, খরগোশ, ঈগল পাখি, বাবুই পাখি, টিয়া, মাছরাঙা পাখি, অজগর সাপসহ নানা প্রজাতির প্রাণী। এগুলো রাখার কোন অনুমোদন নেই পার্ক কর্তৃপক্ষের।
নিজেদের ব্যবসায়ীক চিন্তা মাথায় রেখে দেশী প্রজাতির বন্যপ্রাণী বছরের পর বছর ধরে বন্ধী রেখে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা অব্যাহত রেখেছে। এর মাঝে বন্যপ্রাণী অধিদপ্তরে লিখিত প্রাপ্তির ভিত্তিতে ঢাকা থেকে তদন্ত টিম পরিদর্শনে আসে। তথন এ ধরনের পরিবেশ না থাকায় বরং পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
কাঁঠালী গ্রামের বাসিন্ধা নাজমূল, কবির, হারুসহ কয়েকজন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এ পার্কের কারনে। এর ভিতরে স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে নানা বয়সী যুবক যুবতী ঘন্টার পর ঘন্টা বসে অসামাজিক কার্যকালাপে লিপ্ত রয়েছে।’
কাঁঠালী চিলড্রেন পার্কের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি ঢাকায় আছেন বলে জানান।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর রমিজউদ্দিন বলেন, খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ থাকলে অবশ্যই আমরা তদন্ত করে দেখবো।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যপ্রাণী আইনে পার্কে কি ধরনের প্রাণী রাখা যাবে এবং অসামাজিক কার্যকালাপে পার্ক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা রয়েছে কিনা তা ক্ষতি দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৮ মে ২০২২