Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় ঈদ উদযাপন
হাজীগঞ্জ

হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় ঈদ উদযাপন

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুররে হাজীগঞ্জের ৪০ গ্রামের কিছু সংখ্যক মুসল্লি আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

২ মে সোমবার হাজীগঞ্জের সাদ্র দরবার শরীফ সংলগ্ন সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাতে ইমামতি করেন আগাম ঈদের প্রবক্তা সাদ্রা দরবারের পীর মাওলানা আরিফ বিল্লাহ চৌধুরী। 

এর আগে রোববার নাইজার আর আফগানিস্থানে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ উল ফিতর পালন করে একই দরবারের আরেক পক্ষ। হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফের মরহুম পীর আল্লামা মোহাম্মদ ইসহাক চৌধুরীর অনুসারীগন গত ৯৩ বছর আগে সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছেন। 

মাওলানা আরিফ বিল্লাহ চৌধুরী জানান, চাঁদ দেখার ভিত্তিতে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি। রবিবার মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখা গেছে। তাই মুসলিম বিশ্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ৩০ রোজা শেষ করে আমরাও তাদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছি। 

এদিকে গতকাল রবিবার (১ মে) সাদ্রা দরবার শরীফের একাংশ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। প্রথম চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে এবং ভোররাতে ঘোষণা দিয়ে রবিবার (১ মে) হাজীগঞ্জের সাদ্রা হামীদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদারাসা মাঠে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।ওই ঈদের জামাতে ইমামতি করেন সাদ্রার মরহুম পীরের ছেলে মুফতি জাকারিয়া আল মাদানী। 

তিনি বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আফ্রিকার দেশ নাইজার, মালি ও এশিয়ার দেশ আফগানিস্তানে চাঁদ দেখার খবর পাই। এরপর তা যাচাই-বাছাই করে ভোররাতে আমরা ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছি ও ঈদ পালন করেছি। তিনি আরো বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নয়, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে কোরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা ঈদ উদযাপন করে থাকি। ফলে সর্বপ্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি। তাই আমাদের এখানে সকাল সাড়ে ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাদ্রাসহ ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলো হলো, হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, দক্ষিণ বলাখাল, শ্রীনারায়নপুর, মনিহার, বড়কুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

এদিকে রবিবার ও সোমবার দুই দিন ঈদ পালনের কারনে স্থানীয় আগাম ঈদ উদযাপনকারীদের নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সরজমিনে দেখা যায়, সাদ্রাসহ পাশের গ্রামগুলোর অনেক পরিবারে ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। শিশুসহ সব বয়সের মানুষ ঈদগাহে যেতে দেখা যায়। তবে ওইসব গ্রামের অধিকাংশ মানুষ সারাদেশের মানুষের সঙ্গে আগামীকাল ঈদ উদযাপন করবেন। 

উল্লেখ্য, বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে প্রতি বছর চাঁদপুর জেলার তিনটি উপজেলার ৪০ গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়ে আসছে। সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা ৯৩ বছর ধরেই প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সাদ্রাসহ চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে ঈদ উদযাপন করে থাকেন।

সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আল্লামা মোহাম্মদ ইসহাক ১৯২৮ সাল থেকে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ইসলামের সব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন। মাওলানা ইছহাকের মৃত্যুর পর থেকে তার ৬ ছেলে এ মতবাদের প্রচার চালিয়ে আসছেন।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ২ মে ২০২২