চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো সোনার বাংলা গড়ার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রধামন্ত্রনী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও’র তত্ত্বাবধানে আজ থেকে ক্ষনগননা শুরু করবেন।
রোববার সকাল ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং হয় না। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শতকরা ২২জন বাড়িতে থাকেন না। ইউপি সদস্যের ক্ষেত্রে ২% অনপুস্থিত থাকে। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায় সরকারি কার্যক্রম নিয়ে যে মিটিং করার কথা সেগুলোও হয় না। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় কোন চেয়ারম্যানকে কাছে পাওয়া যায় না। তারা কোথায় থাকে তাও আমরা জানিনা। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের আইন শৃঙ্খলার প্রতিবেদন আমি চাই। সরকার বিভিন্নভাবে ইউনিয়ন পরিষদকে সহযোগিতা করছে।
জেলা প্রশাসক ইসলামিক ফাউন্ডেনশনের কার্যক্রমের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই সংস্থা শহর ও গ্রামের মসজিদগুলোতে শুক্রবার জুম’আর নামাজে কি খুৎবা দেয়া হচ্ছে তা মনিটরিং করেন না। যারা কারণে দেশের চলমান গুজব, জঙ্গিবাদ, মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে ইত্যাদি বিষয়ে জুম’আর খুৎবাতে বলা হয়। যে সব মসজিদের খুৎবায় এসব বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে না, সেই সব মজসিদগুলো তত্ববধান বাড়াতে হবে এবং এই সংক্রান্ত তথ্য সহ আগামী সভায় প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
সভায় কমিটির সদস্যদের প্রশ্নের আলোকে শহরে নতুন করে গড়ে উঠা স্কুল ও মাদ্রাসা প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জেলা প্রশাসক বলেন, আপনারা প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে পরিদর্শন করছেন না। আপনাদের ৭-৮ জন কর্মকর্তা রয়েছে। এইসব বিষয়গুলো নজরদারী করতে এবং কাজ করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা লাগলে আমাদেরকে জানাবেন।
ইউএনওদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, চাঁদপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। এই সংক্রান্ত কাজের একটি প্রতিবেদন আমার কাছে জমা দিতে হবে।
ফৌজদারী মামলা প্রসঙ্গে বলেন, এই মামলার সংখ্যা ৫০% এর নীচে নামিয়ে আনতে হবে। এই কাজে আপনারা ৩জন নিয়োজিত আছেন। প্রয়োজনে আমিও কোর্টে বসবো। আমার কোর্টে বসতে কোন সমস্যা নেই।
জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার মধ্যে হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম খুবই কম। এই দুই উপজেলার কার্যক্রম সক্রিয় করতে হবে।
মাজেদুর রহমান খান বলেন, রেলওয়ের যাত্রীরা বিভিন্নভাবে হয়রানি হয়। এইসব বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসে। রেলওয়ের পুলিশদেরকে মিটিং আসতে বলা হলেও তারা আসেন না। রেলওয়ের যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করার জন্য প্রয়োজনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হবে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা কাজের মধ্যে অবহেলা করলে তা গণমাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো.জামাল হোসেনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমান, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, এনএসআই চাঁদপুরের যুগ্ম পরিচালক মো. আজিজুল হক, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্যাহ, নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এ.এস.এম. দেওলওয়ার হোসেন।
প্রতিবেদক:মাজহারুল ইসলাম অনিক