ছেলেটি ঝালমুড়ি বিক্রি করে। বাবা মো. মুসলিম একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। হুইল চেয়ারেই যার নিত্য দিনের বসবাস। মা খাদিজা বেগম গৃহিণী। টানাপোড়েনের সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। তবে স্বপ্ন তার আকাশ ছোঁয়ার। হতে চায় পাইলট। উড়ে বেড়াতে চায় সারা বিশ্ব।
বলা হচ্ছে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মো. আসিবের কথা। এবার পিএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সবগুলো বিষয়েই এ প্লাস পেয়েছে আসিব। তার ইচ্ছা, বড় হয়ে সে পাইলট হবে।
তবে আগে থেকেই আনন্দের এই দিনটি অন্য সবার মতো উদযাপন করতে চেয়েছিল আসিব। তাই অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী আসিব সমাপনী পরীক্ষার পরই ঝালমুড়ি বিক্রি শুরু করেন। ওই সময়ই অন্যদের মিষ্টিমুখ করানোর জন্য জমান ১১০ টাকা।
জানা গেছে, আর্থিক সাহায্যের জন্য আসিবের মা তার বাবাকে হুইল চেয়ারে করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান। দারিদ্র্যতাকে জয় করা মেধাবী আসিব বাবা-মায়ের আগ্রহ এবং নিজের প্রচেষ্টায় পড়াশোনা করে এ ফলাফল অর্জন করেছে।
এদিকে এ ফলাফলে পরিবারের পাশাপাশি আসিবের শিক্ষকরাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থী আসিব ‘এ প্লাস’ পেয়েছে। পাশপাশি আমাদের বিদ্যালয় থেকে ৫ জন ‘এ প্লাস’ ও ১৩ জন ‘এ’ সহ মোট ৩৫ জনের সবাই পাশ করেছে।
প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, আমি আসিবসহ অন্য শিক্ষার্থীদেরও উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি। আসিব প্রমাণ করেছে পরিশ্রম করলে সাফল্য অর্জন করা যায়।
পরীক্ষার ফলাফলের পর উচ্ছ্বসিত আসিব বলেন, পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য দিন-রাত লেখাপড়া করেছি। রেজাল্ট শোনার পর খুব ভালো লাগছে। আমার মনের আশা পূর্ণ হয়েছে।
ভবিষ্যতের ইচ্ছা সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিব মৃদু হেসে বলেন, আমি বড় হয়ে পাইলট হতে চাই। এজন্য আমার যত পরিশ্রম করতে হয়, আমি করবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
প্রসঙ্গত, একযোগে সোমবার প্রকাশ হয়েছে ২০১৮ সালের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী এবং জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল। এতে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বার্তা কক্ষ
২৫ ডিসেম্বর,২০১৮
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur