Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জে ২ দিনের ব্যবধানে মারা যাওয়া ৪ জনের করোনা নেগেটিভ
হাজীগঞ্জে ২ দিনের ব্যবধানে মারা যাওয়া ৪ জনের করোনা নেগেটিভ

হাজীগঞ্জে ২ দিনের ব্যবধানে মারা যাওয়া ৪ জনের করোনা নেগেটিভ

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ২ দিনের ব্যবধানে করোনার উপসর্গে মারা যাওয়া ৪ জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। তাদের সবার নমুনা টেস্টের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ এসেছে। সিভিল সার্জন ডা.সাখাওয়াত উল্লাহ রোববার রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হাজীগঞ্জে গত ৫ মে একদিনে করোনার উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে মারা গেছেন। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টায় মারা যান পৌর এলাকার ধেররা পাটওয়ারী বাড়ির লিপি আক্তার (২০) ও বিকেলে একই ওয়ার্ডের খাটরা বিলওয়াই গ্রামের শাহজাহান সাজু (৬৫)। এর আগে সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর অলিপুর গ্রামের শহিদুল্লাহ (৬৫) নামে এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

এর আগে ৪ মে হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের উত্তর অলিপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে বৃদ্ধ মো. শহীদ উল্যাহ (৬৫) করোনার উপসর্গে মারা যান। তারা সবাই করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়। দু’দিনের ব্যবধানে এতজন লোকের মৃত্যুতে উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক দেখা দেয়। শনিবার তাদের ৪ জনের নমুনা টেস্টের রিপোর্ট আসে করোনা নেগেটিভ।

করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর চাঁদপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নের কামরাঙ্গা গ্রামের আলী আজ্জম পাটওয়ারী (৬৫) গত ৭ মে দুপুরে নিজ বাড়িতে মারা যান। মৃত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ করা হয় ও বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়। শনিবার তার নমুনার রিপোার্ট আসে করোনা নেগেটিভ। এর ফলে তিনি করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পর পুনরায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেয়ে থাকতে পারেন বলে যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল তার অবসান ঘটলো। তিনি চাঁদপুরে প্রথম করোনায় মৃত হিসেবে শনাক্তকৃত ফয়সালের (৪১) শ্বশুর। ফয়সাল গত ১১ এপ্রিল কামরাঙ্গায় তার শ্বশুর বাড়িতেই মারা যান।

এদিকে রোববার চাঁদপুরে আরো ১ জনের নমুনা টেস্টের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ এসেছে। আক্রান্ত ব্যক্তি (৪৫) চাঁদপুরের একটি প্রাইভেট প্যাথলজিতে চাকুরি করতেন। এছাড়া লক্ষ্মীপুর থেকে করোনায় আক্রান্ত এক রোগী ফরিদগঞ্জে এসে সেখানে চিকিৎসাধীন। সে কারণে চাঁদপুরে এখন করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮জন। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৪জন। সুস্থ হয়েছেন ১২জন। হাজীগঞ্জের ইউএনও-কে রোববার করোনা মুক্ত তথা সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন জানান, ১০ মে রোববার মোট ৪জনের রিপোর্ট এসেছে। এর মধ্যে ১জনের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ। বাকী ৩জনের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ। এ নিয়ে চাঁদপুরে জেলায় বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত ৪৮জনের উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান হলো : চাঁদপুর সদরে ২৬, ফরিদগঞ্জে ৭, হাজীগঞ্জে ৪, মতলব উত্তরে ৫, কচুয়ায় ২, হাইমচরে ২ ও শাহরাস্তিতে ২জন। উল্লেখ্য, মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এখনো করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি।

তিনি আরো জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়ার তৃতীয় নমুনা টেস্টের রিপোর্টও করেনা নেগেটিভ আসায় রোববার তাকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়। তার প্রথম রিপোর্টটি করোনা পজেটিভ আসলেও পরের ২টি রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রেরিত এক প্রেস নোটে জানানো হয়, রোববার আরো ৬০ জনের নুমনা পাঠানো হয়েছে করোনা টেস্টের জন্য। এ নিয়ে মোট প্রেরণকৃত নমুনার সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৮৩। এর বিপরীতে রিপোর্ট এসেছে ৬৯৬টির। রিপোর্ট অপেক্ষমান রয়েছে ৮৭টি।

এতে আরো বলা হয়, চাঁদপুর জেলায় এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৫০ জন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৪জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রোগীর সংখ্যা ১৬ জন। জেলায় মোট হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংখ্যা ৩৬৪৪ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৪৩৮ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২০৬জন। (প্রবাহ)

বার্তা কক্ষ,১১ মে ২০২০