হাজীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় অভিযোগে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিএনপি কর্মীরা। ওই সময় হামলাকারীরা বসতঘর ভাংচুর চালিয়ে নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তারা বসতঘরে থাকা ৫ নারী-পুরুষকে মারধর করে গুরুতর জখম করে।
আহতরা হলেন কবির হোসেন, মিলন, রিমা আক্তার, হোসনেয়ারা বেগম ও সীমা আক্তার।
এদের মধ্যে ৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও হোসনেয়ারা বেগমের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে ৮ জনকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনাটি গত ৯ জানুয়ারি শনিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের চরবাড়িতে ঘটেছে।
জানা যায়, পৌর নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর ধানের শীষ প্রতীকে চরবাড়ির লোকজন ভোট না দেওয়ার কারণে একই এলাকার মুন্সীবাড়ির (সাবেক এমপি এম এ মতিনের) বিএনপি কর্মীরা ওই বাড়ির সাধারণ লোকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
প্রায় সময় তারা বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিয়ে আসত বাড়ির লোকজনকে। তার মধ্যে মৃত কামিজ উদ্দিন কাজীর ছেলে কবির হোসেনসহ তার পরিবারের লোকজনকে বিএনপি কর্মীদের রোষানলের নজরদারিতে রাখত। তাদের কৌশল অনুযায়ী ঘটনার দিন শনিবার দুপুর ১২ টায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী মাঠে ছাত্রদল কর্মী হাসিব, আইডিয়াল, জিয়া ও রাসেলসহ কয়েকজন যুবক কবির হোসেনের বড় ভাই মিল্লাদ হোসেন কাজীর খিরা ক্ষেতে খিরা চড়তে যায়। ওই সময় মিল্লাদ হোসেন তাদের ডাক দিলে ছাত্রদল কর্মীরা পিছু হটে।
পরবর্তীতে তারা বিএনপি নেতা ফিরোজ মুন্সী, নব নির্বাচিত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমরান হোসেন মুন্সী ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব (একাংশের) জিসান আহম্মেদ ছিদ্দিকীর ইন্দনে ছাত্রদল নেতা ইব্রাহীম এবং নব নির্বাচিত কাউন্সিলর এমরানের ভাতিজা আইডিয়ালের নেতৃত্বে প্রায় ১৫/২০ জন ছাত্রদল কর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চরবাড়িতে গিয়ে কবির হোসেনের বসত ঘরে ভাংচুর চালায়।
ওই সময় ঘরে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা, দেড় ভরি স্বর্ণসহ প্রায় ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি করে।
খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানার এস আই আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি কাউন্সিলর এমরান হোসেনকে বিষয়টি অবহিত করে। ঘটনার দিন রাতে কবির হোসেন বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
প্রসঙ্গত, বিএনপির সরকার পতন আন্দোলনে চাঁদপুর-লাকসাম রেল পথে বোয়ালজুড়ি খালের উপর সেতুতে রাতের অন্ধকারে ফিরোজ মুন্সী ও এমরান মুন্সীর নেতৃত্বে অগ্নিসংযোগ করত বলে স্থানীয় শাহপরান জানান। আর এতে বাধা দিতেন চরবাড়ির লোকজন। এর জের ধরেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
থানায় অভিযোগকারী ক্ষতিগ্রস্ত কবির হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ঘটনার সময় আমরা কেউ বাড়িতে না থাকায় মুন্সীবাড়ির ছাত্রদল নামধারী কর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাড়িতে এসে বসতঘর ভাংচুর চালায় এবং নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে তারা দ্রত সময়ের মধ্যে শালিস মিমাংসায় বসতে চায়।
হাজীগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট || আপডেট: ০৭:৪৫ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৬, রোববার
এমআরআর