বয়সের সাথে সাথে কিশোরী থেকে বধূ বেশে হাল ধরেন সংসার জীবনে। এরই মাঝে দুই ছেলে ও এক মেয়ে এবং স্বামীর সেবা যত্নে কখন যে শরীলের মেরুদণ্ড ক্ষয় করে রেখেছেন তা আর টেরেই পাননি শতবর্ষী এই বৃদ্ধা নারী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের পশ্চিম হাটিলা ভৃঁইয়া বাড়ীর তরিকত নেছার জীবন কাটছে এক বিছানায়। প্রায় ৩০ বছর পূর্বে স্বামী হাফিজ উদ্দিনকে হারিয়েছে। এর মাঝে বড় ছেলে জামাল হোসেনও নিখোঁজ প্রায় এক যুগ ধরে। ছোট ছেলে মনির হোসেন একজন দিন মুজুর তার ভাঙ্গা ঘরের সামনের রুমের বিছানায় তরিদুর নেছার বসবাস। কিন্তু ঘরের চার পাশের টিন গুলো খুলে আছে। বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতরে পানি ডুকে বিছানা ভিজে যায়। কিযে এক নিদারুণ কষ্টে যাচ্ছে তাদের জীবন। যেন দেখার কেউ নেই।
বৃদ্ধার ছেলে মনির ও তার স্ত্রী বিউটি বেগম তাদের চার সন্তানের পাশাপাশি অসুস্থ মায়ের সেবা যত্ন করে আসছেন বছরের পর বছর। কিন্তু যে হারে দৈনিক বৃদ্ধার ঔষুধ খরচ বাবৎ প্রায় দুইশত টাকার মত লাগে, সে খরচ চালাতে গিয়ে তাদের সংসারে দুঃখের যেন শেষ হচ্ছেনা। তার পরেও মায়ের সেবা যত্নে যেন কোন কমতি রাখছেন না ছেলে মনির ও স্ত্রী বিউটি বেগম।
তারা বলেন, বৃদ্ধার বর্তমান বয়স একশ বছরের উপরে। বয়স্ক ভাতা ছাড়া আর কিছুই ঝুটে না। তবে আমরা মাঝেমধ্যে সরকারি চাল পাই। কিন্তু তা দিয়ে কি পরিবারের খরচ চলে। ঠিকমত মানুষের কাজ করতে পারি না বৃদ্ধ মায়ের সেবা যত্নে লেগে থাকতে হয়। ঘরে পশ্রাব পায়খানা করে তা পরিষ্কার করতে হয়।
বৃদ্ধা তরিদুর নেছা বলেন, আমার এখন কোন চাওয়া পাওয়া নেই। স্বামী হারিয়ে ও নিখোঁজ সন্তানের চিন্তা আমাকে কাদায়। ছোট ছেলে ও পুত্রবধূর সেবায় ভাল আছি। কিন্তু ঔষুধ ঠিকমত কিনতে না পারায় অসুস্থ হয়ে যাই।
এ বিষয়ে ৮নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, বৃদ্ধার ছেলে প্রায় পরিষদে আসলে তার মায়ের খোজখবর নেই। সামনে সুযোগ সুবিদা থাকলে বৃদ্ধা ও তার পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ২৩ মে ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur