বার বার ‘যৌতুক দাবি’ করে টাকা না পেয়ে গৃহবধূর ওপর শারীরিক ‘নির্যাতন’ চালায় শ্বশুরালয়ের লোকজন। আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শুক্রবার (২২ জুলাই) ভোর রাত ৪ টায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের মৈশামুড়া গ্রামের শেখ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্বামী হাছান তার মা শাহানারা বেগম ও বোন জাহানারা আক্তার মিলে গৃহবধূ সাথীকে এলোপাতাড়ি পিঠিয়ে গুরতর জখম করে ঘরে আহত অবস্থায় তাকে ঘরে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
এ ঘটনা সাথীর মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানা ৪ জনকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন, স্বামী হাছান শেখ প্রকাশ সুজন, বোন জাহানারা, মা শাহানারা বেগম ও বাবা কামাল শেখ ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ‘২০১৩ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের মৈশামুড়া গ্রামের শেখ বাড়ির কামাল শেখের ছেলে হাছান শেখের সাথে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের শ্রীকালিয়া গ্রামের ভূইয়া বাড়ির মাহবুব ভূইয়ার মেয়ে সাথী আক্তারের বিয়ে হয়।
বিয়েতে সাথীর বাবা-মা ৪ ভরি স্বর্র্ণ এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র দিয়েছেন বলে জানায়। সাথী ও হাছানের সংসারে একটি ফুটফুটে শিশু সন্তান জম্ম নেয় । যার বয়স ২ বছর ৫ মাস ।
ওই সময় হাছান হাজীগঞ্জ বাজারের(পশ্চিম বাজারের শেখ মার্কেটে) জুতার ব্যবসা করতো। ব্যবসা সুবিধা করতে না পেরে বিদেশ যাওয়ার জন্য তার শ্বশুরের কাছে ‘৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে।’
হাছানের শ্বাশুড়ি জাহানারা বেগম মেয়ের জামাইকে বিদেশ যাওয়ার জন্য ‘৫ লাখ টাকা দেয়।’ কিন্তু হাছান বিদেশে যেতে না পেরে এলাকায় ঘুরে ফিরে ‘অনর্থক’ সময় কাটিয়ে টাকাগুলো শেষ করে পেলে । টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে হাছান তার স্ত্রী সাথীকে পুনরায় বাপের বাড়ি থেকে আরো ‘২ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ’ প্রয়োগ করে । সার্থ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় হাছান সাথীর উপর অমানসিক ‘নির্যাতন’ চালায়।
খবর পেয়ে সাথীর মামা আবুল হোসেন খাঁন সাথীর শ্বশুর বাড়ি থেকে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তা ভাগনি সাথীকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমল্পেক্সে ভর্তি করায় । বর্তমানে সাথীর অবস্থা আশঙ্কাজনক রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাথীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ের বিয়ের সময় ৪ ভরি স্বর্ণসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র দিয়েছি। জামাই (হাছান) বিদেশ যাবে বলে ৫ লাখ টাকা দেই কিন্তু পুনরায় আবারও জামাই হাছান আমার মেয়েকে ২ লাখ টাকা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে দিতে বলে। এই টাকা না দেওয়া মেয়েকে তারা সকলে মিলে শারীরিক নির্যাতন করে।’
এ ঘটনায় একাধিকবার চেষ্টা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক আ. মান্নান কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে এসেছি । এখন দেখি উভয় পক্ষকে নিয়ে থানা বসে বিষয়টি সমাধান করা যায় কি না।’