মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) ঘড়ির কাটায় দুপুর পৌনে ১টা।
চাঁদপুর শহরের ব্যস্ততম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে ছোটবড় যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। হঠাৎ জিন্স প্যান্ট আর টি-সার্ট পরিহিত এক যুবককে যান-প্রাণে দৌঁড়াতে দেখা গেলো। ক্ষাণিক মুহূর্তেই তাঁর পেছনে ছুটতে লাগলো চাঁদপুর মডেল থানার চৌকশ পুলিশ অফিসার (এসআই) সেলিম মিয়া। তিনি পেছন থেকে বার বার আওয়াজ ছুড়ছেন ‘দাঁড়া, দাঁড়া, না হয়…।
দৌঁড়ে পালিয়ে বাঁচতে চাওয়া যুবক কয়েকবার পেছনে তাকায় আর পুলিশ অফিসার রিভালবার বের করার ভয় দেখান, যাতে ভয়ে সে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু তাতেও কাজ হলো না। চতুর-সাহসী যুবক জীবন হাতে নিয়ে দোঁড়াতে থাকে। হেরে থেমে যেতে রাজি নন, পুলিশ অফিসার সেলিম মিয়াও। দায়িত্ব পালনে নিজের জীবন বাজি ধরে ব্যস্ত সড়কের যন্ত্রদানবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনিও দোঁড় অব্যাহত রাখলেন।
এমন দৃশ্যে থমকে যায় রাস্তার যানবাহন আর পায়ে হাঁটা নানান বয়সের পথচারীগণ। অথচ সাহস করে পুলিশের ধাওয়া খেলে পালিয়ে যেতে থাকা যুবককে ধরে ফেলতে একজন পথচারীও এগিয়ে এলো না।
অবশ্য দু’একজন কৌতুহলী পথচারী দোঁড় দিলেন পুলিশ অফিসারের পেছন পেছন। এরই মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটে এলেন আরেক চৌকশ পুলিশ অফিসার (এসআই) অনুপ চক্রবর্তী।
একপর্যায়ে পালানোর আর উপায়ন্তর না পেয়ে তাড়া খাওয়ার যুবক ঢুকে পড়লেন চাঁদপুর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের ভেতরে। শেষ পযর্ন্ত সেখানকার পুকুরে লাফ দেয়ার চেষ্টাও তার ব্যর্থ হলো। পুলিশ ধরে ফেললো তাকে। সাথে সাথে যথা নিয়মে হাতে পড়ানো হলো লোহার হাতকড়া।
এবার একে একে কৌতুহলি নানান মানুষের উপস্থিতি বেড়ে গেলো। তারা পুলিশের এমন দুঃসাহসিকতাকে ধন্যবাদ দিতে লাগলো। অথচ পুলিশকে সহযোগিতা করার মতো কাউকে পাওয়া গেলো না।
চাঁদপুর মডেল থানার এসআই অনুপ চক্রবর্তী জানান, দিনে দুপুরে দীর্ঘ সড়কপথ দৌঁড়ে আটক করা যুবক মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী মনির মাঝি (৩৫)। সে চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।
আটক মনির মাঝির নামে চাঁদপুর মডেল থানায় মাদক আইনে মামলা রয়েছে।
প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম