নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হাজীগঞ্জে ৩শ’ বছরের পুরোনো পুকুর ভরাট

হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন মকিমাবাদ গ্রামে (ছোট মসজিদ সংলগ্ন) জলাশয় ভরাটের আইন অমান্য করে ৩শ’ বছরের পুরনো সর্ববৃহৎ একটি পুকুরটি ভরাট হয়ে হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন মসজিদের মুসল্লী ও স্থানীয় লোকজন। কিন্ত তারা কোনো ধরনের কর্ণপাত না করেই পুকুরের একাংশ ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জলাশয় ভরাটের ক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সরাসরি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। গত বছরের প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, জলাশয়সমূহ উম্মুক্ত রাখতে হবে। দায়ী ব্যক্তি, ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠি ও সরকার যুগপৎ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জলাশয়সমূহ উম্মুক্ত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে পুকুরের একাংশ ভরাট করে ভূমি গ্রাস করা হচ্ছে। নথিপত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ২১৩ মকিমাবাদ মৌজার ৮৭১ দাগের ও আরএস ২৩৭ খতিয়ানের ৮২ শতাংশের এ পুকুরটি মসজিদসহ প্রায় ৪০ জন ব্যক্তির মালিকানাধীন। আরএস খতিয়ান অনুযায়ী এর মালিক মকিমাবাদ গ্রামের সাহেব বাড়ির জনৈক ব্যক্তিরা।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, সাহেব বাড়ির কাজী আমির হোসেনের ছেলে নুর আলম ও তার ভাই আব্দুল মান্নান স্থানীয় দু’ব্যক্তির কাছ থেকে কিছুদিন পূর্বে ৬ শতাংশ ভ‚মি ক্রয় করেন। বর্তমানের ওই খরিদ করায় ভ‚মির ওপর তারা প্লাসাইটিং করে ট্রাকে করে বালু ফেলছেন। তাদের এমন কাজে মসজিদে আগত মুসল্লী ও স্থানীয় লোকজন বাধা প্রদান করলেও তারা কোনো কর্ণপাত না করেই ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

মসজিদে আগত মুসল্লী ও স্থানীয় লোকজন বলেন,‘এ পুকুরে স্থানীয় লোকজন এবং মসজিদের মুসল্লীদের সুবিধার্থে সে সময়ে ৩টি ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে। ঘাটলা নির্মাণের পর এ পুকুরে মানুষ গোসল করে ও মুসল্লীরা নামাজের অযু করেন। তবে যে ভাবে ভরাট করা হচ্ছে এতে গোসল ও মসজিদে নামাজ পড়তে আসা ব্যক্তিরা চরম দূর্ভোগে পড়বেন।

তারা বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ অত্র এলাকাটিতে এ জলাশয়টি বিরাট উপকার করতো। গৃহস্থালী নানা কাজে তারা নিয়মিত এর পানি ব্যবহার করেন। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও জলাবদ্ধতা দূর করে। ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় অগ্নি নির্বাপণের জলাধার এটি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে পুকুরটি ভরাট না করার জন্যে তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মো.জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, ‘কেউ লিখিত অভিযোগ দিয়ে থাকলে তদন্ত করেই আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়–য়ার কাছে মোবাইল ফোনে বলেন,‘আমাকে এখনো কেই অবহিত করেনি। এখন আমি আপনার কাছ থেকে শুনেছি। ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে খোঁজ নেব।’

প্রতিবেদক : জহিরুল ইসলাম জয়
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭: ০০ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮
এজি

Share