হাজীগঞ্জের প্রকৌশলী বাপ্পি হত্যার আড়াই বছর পর ৪ জনকে গ্রেপ্তার করছে পিবিআই পুলিশ। দীর্ঘ আড়াই বছর পর পিবিআই পুলিশ সোমবার (১৭ অক্টোবর ২০২৩) ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আলহাজ্ব মো. সেলিম মিয়ার ব্রিকস ফিল্ডের ম্যানেজার গৌতম সাহা, সারের দোকানের ম্যানেজার সুকেশ এবং গৌতমের এলাকার সাগর ও অন্তু।
হাজীগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মো. সেলিম মিয়ার বড় ছেলে আবু বকর (বাপ্পি) গত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ সালে রাত আনুমানিক ৯ টায় বাসা থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফেরত যায়নি। প্রকৌশলী বাপ্পি’র বাসায় যেতে দেরি দেখেই পরিবারের লোকজন তাকে খুজতে বের হন। ঐ সময় প্রকৌশলী বাপ্পি’র হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিরও সুইচ বন্ধ পেয়ে পরিবারের লোকদের আরো হতাশা বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন… হাজীগঞ্জে প্রকৌশলী বাপ্পি হত্যার দুবছরেও রহস্য উন্মোচন হয়নি
ঐরাতেই পরিবারের লোকজন ও হাজীগঞ্জ থানার পুলিশসহ সারা রাত খোঁজাখুজি করেও বাপ্পিকে না পেয়ে পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারী সকালে আলহাজ¦ মো. সেলিম মিয়া হাজীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন এবং ২১ ফেব্রুয়ারী কুমিল্লা র্যাব কার্যালয়েও একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু কোন অভিযোগেই প্রকৌশলী বাপ্পিকে খুঁজে বের করতে পারেনি।
২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ সকালে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ- লক্ষ্মীপুর সড়কের জিয়ানগর ছোলাইমান ব্যাপারীর বাড়ীর (৪ফুট পানি ওয়ালা) পুকুরে প্রকৌশলী বাপ্পি’র লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পুরো হাজীগঞ্জে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রকৌশলী বাপ্পি’র লাশ পাওয়ার পর একটি মহল অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে এ হত্যাকান্ডটি পরিবারের লোকজনই করেছে এবং প্রকৌশলী বাপ্পি আত্মহত্যা করেছে বলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। সেই গুজবে আইন শৃঙ্খালা বাহিনীও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যায়। যা শুনে পুরো পরিবারটি হতাশ হয়ে পড়ে।
মামলার কিছুদিন যেতেই প্রকৌশলী বাপ্পি’র বাবা আলহাজ¦ মো. সেলিম মিয়া মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে হস্তান্তর করেন। সে থেকেই বর্তমানে পিবিআই পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছেন। দীর্ঘ আড়াই বছর পর পিবিআই পুলিশ সোমবার (১৭ অক্টোবর ২০২৩) ৪জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আলহাজ¦ মো. সেলিম মিয়ার ব্রিকস ফিল্ডের ম্যানেজার গৌতম সাহা, সারের দোকানের ম্যানেজার সুকেশ এবং গৌতমের এলাকার সাগর ও অন্তু।
প্রকৌশলী বাপ্পি’র বাবা ও মায়ের সাথে কথা বললে তারা বলেন, ‘আমাদের বাপ্পি’র কোন শত্রু নেই, সে অত্যান্ত সান্ত ও চুপচাপ থাকতেন। সেদিন রাতে বাসা থেকে বের হওয়ার পরপরই তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া পাই। ঐ রাতে বহু খোঁজা খুজি করেছি। র্যাব-পুলিশের কাছে গিয়ে ছেলের নিখোঁজের সন্ধান চেয়েছি। দুদিন পর ছেলের লাশ পেয়েছি। আর আমাদের ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আর যারাই এ হত্যার সাথে জড়িত আর সে যেই হউক তাকে আইনের আওতায় আনা হউক, এটাই দাবী।’
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ১৭ অক্টোবর ২০২৩