হাজীগঞ্জের সর্বত্র নিষিদ্ধ পলিথিনের সয়লাব

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সর্বত্র নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব হয়ে গেছে। যার ফলে পরিবেশ ও কৃষি মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু একটা অভিযান পরিচালনা করা হলেও আবার যেই সেই ইঁদুর বিড়ালের খেলার মতো হয়ে যায়। যে যার ইচ্ছা মতো এ ব্যবসাটি শুরু করে। তাই প্রশাসনের উদ্যোগ কাজে আসে না।

তবে সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর মাসে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম প্রায় দুই লক্ষ টাকা জরিমানা ও কয়েকটি পলিথিনের মজুদ রাখা গোডাউন সিলগালা করে দেয়। এর পর আর কোন প্রশাসনিক অভিযান না পড়ায় আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে নিষিদ্ধ পলিথিনের পাইকারী বিক্রেতারা। যে কারনে বর্তমানে পুরো উপজেলার পাড়া মহল্লার দোকানপাটে নিষিদ্ধ পলিথিনের সয়লাব দেখা যায়।

অনেকের মতে এটির উৎপাদন সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করা হলে ভালো হতো। যদিও বর্তমান সরকার পলিথিনের বিষয়ে মারাত্মকভাবে কঠোর অবস্থানে। তার পরেও বর্তমানে বেকারীর উৎপাদিত খাদ্য সামগ্রী,চাল ডাল, ইত্যদির সাথে পাল্লা দিয়ে ওয়ান টাইম নামে পলি চায়ের কাপ, পানি অথবা জুস ও কপির ওয়ান টাইম গ্লাস গুলোর অবৈধ ব্যাহার প্রতিযোগিতামুলক বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবেশ দূষণ আরোও অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষ জেনে না জেনে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ গ্রহণ করছে। যেগুলো গরম পানি অথবা চায়ের সাথে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এতে করে শিশুদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হবে।

হাজীগঞ্জের নদী- নালা,খাল -বিল, রাস্তা-ঘাট পুকুর এমন কি বাড়ির আশেপাশে পলিথিনের বিভিন্ন প্যাকেট পড়ে কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হতে না হতেই অনেক স্থানে নালা ডোবা বন্ধ হয়ে পানি চলাচল ব্যাহত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে এ নিষিদ্ধ পলিথিনের পন্য সামগ্রী।

যে হারে পলিথিনের ব্যবহার প্রয়োজন অপ্রয়োজনে হচ্ছে তা এখনই বন্ধ করা না হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কৃষি চাষ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবার আশঙ্কা করছেন উপজেলা কৃষি সম্পসারন বিভাগ।

সম্প্রতি বর্ষার পানি চলে যাওয়ার পর শুধু মাত্র কৃষক গনই বলতে পারেন তারা পানি নেমে যাবার পর জমি থেকে কি পরিমান পলিথিন পরিষ্কার করতে হয়েছে। এ বিষয়ে কৃষক রহমতউল্ল্যাহ, আবিদ মিয়া ও চাঁন মিয়া বলেন, আমাদের রাস্তার পাশের জমিনে মানুষ পলিথিন পালায় যে কারনে এগুলোতে হাল চাষ করা অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় হাজীগঞ্জ উপজেলায় নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করা হয়। তাও নাকি বিভিন্ন মহল ম্যেনেজ করে। তাছাড়া দেশের নারায়নগঞ্জ, চিটাগাং ও কুমিল্লা অঞ্চল থেকে হাজীগঞ্জ বাজারে পাইকারী ট্রাকে করে নিষিদ্ধ পলিথিন গুদামজাত হচ্ছে। দিনের পর দিন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সু-কৌশলে তাদের এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে হাজীগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমরা নিষিদ্ধ পলিথিনে বিষয়ে কোনো প্রকার ছাড় দিচ্ছি না। ইতিমধ্যে কয়েকটি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়। তার পরেও অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

Share