Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জে নিজ বসতঘরে ছেলের বউয়ের তালা
বসতঘরে

হাজীগঞ্জে নিজ বসতঘরে ছেলের বউয়ের তালা

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে নিজ বসতঘরের দরজা জোরপূর্বক তালা মেরে রেখেছে ছেলের বউ ও শ্বশুর, গত প্রায় ২০ দিন ধরে ঘরের বাহিরে থাকছেন শাশুড়ী।

এমন অভিযোগে গত ১৮ জুন চাঁদপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন শাশুড়ী মোসাম্মৎ মমতাজ বেগম (৫৫)। অভিযুক্তরা হলেন তার পুত্রবধূ মো. রায়হান হোসেনের স্ত্রী জিলহজ আক্তার মুক্তা, মৃত আবুল বাসারের ছেলে বেয়াই মো. শহীদুল্লাহ, শহীদুল্লাহর স্ত্রী বেয়াইন বিউটি বেগম ও মৃত আলতাফালির ছেলে মোহাম্মদ মনু মিয়া।

চাঁদপুর কোর্টের মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুন ২০২৩ বৃদ্ধ বিধবা মোসাম্মৎ মমতাজ বেগম ও তার বোন আনোয়ারা বেগমের উপর হামলা করেন, পুত্রবধূ মো.রায়হান হোসেনের স্ত্রী জিলহজ আক্তার মুক্তা, বেয়াই মো. শহীদুল্লাহ, শহীদুল্লাহর স্ত্রী বেয়াইন বিউটি বেগম ও মৃত আলতাফালির ছেলে মোহাম্মদ মনু মিয়া।

পরে স্থানীয়রা আহতদের হাজীগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে হামলা কারীরা আবারো পথে গতিরোধ করে এবং হাজীগঞ্জ থানায় মামলা না করার জন্য হুমকি প্রদান করে। পরে এক পর্যায় তারা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় এবং চাঁদপুর কোর্টে মামলা দায়ের করে।

জানা যায়, হাজীগঞ্জে উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের সুবিদপুর পন্ডিত বাডীর মৃত মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের বিধবা স্ত্রী মমতাজ বেগম (৫৫)কে পুত্রবধূ অমানবিক নির্যাতন এবং তার ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার কারণে তিনি বিভিন্ন সময় অন্যের ঘরে থাকতে হয় এ বৃদ্ধ মানুষটি পুত্রবধূর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে দিন যাপন করছে।

অভিযোগে আরো উল্লেখ আছে, হামলাকারীরা হামলার সময় আনোয়ারা বেগমের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন যার বর্তমান মূল্য ৮০ হাজার টাকা। জোরপূর্বক সিনিয়া নেয় এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে বাড়ির টিনশেড বাউন্ডারি সহ প্রয়োজনীয় মালামাল ভাঙচুর করে।

চাঁদপুর কোর্টের মামলার অভিযোগের সাক্ষী বলাখাল গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, গোফরানের স্ত্রী শারমিন তাহমিন, ইমরান হোসেনের স্ত্রী খুকি বেগম, সুবিদপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে রায়হান হোসেন, রামপুর নোহাটা গ্রামের মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসানসহ তারা সবাই বলে, যে অমানবিক নেক্কারজনক ঘটনা পুত্রবূধু মুক্তার বাবা সহ পরিবারের লোকজন বৃদ্ধ মহিলার উপর ঘটিয়েছে তা আমরা কখনোই কামনা করি নাই। মূলত গত বছর বৃদ্ধ মহিলার পুত্র তার মাকে ওমরা পালন এ নিয়ে যায়। অথচ যে বাসা পুত্রবধূ ও তার পরিবারের লোকজন ব্যবহার করছে তা মুখে নিলেও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পাপ দিবে। এতে আমরা সবাই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা চাই। যে পবিত্র ওমরা হজ্বকে কটূক্তি করার কারণে আমরা ধিক্কার জানাই।

মমতাজ বেগম বলেন, আমার ছেলের শ্বশুর, শাশুড়ি, নানা শশুর তার স্ত্রী আমাদেরকে হুমকি দিয়ে বলে মেরে গুম করে ফেলবে, বাড়ি ঘর ভাঙচুর করবে। ঐদিন কি করছে তার চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা করবে এজন্য আমি আইনের আশ্রয় নিতে মামলা করেছি। তার পর আমার ছেলেদের কে এবং মেয়ের জামাতাকে দেশে আসলে খুন করবে বলে হুমকি প্রদান করছে। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

জিলহজ আক্তার মুক্তার সাথে বহুভাবে চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে বসত ঘরের তালা জ্বলছে কাউকে না পাওয়া তার সাক্ষাৎকার দেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো.সালামতউল্লাহ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন প্রধানীয়া বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি এবং বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার সিদ্ধান্ত চলমান তবে এখনো কোনো শুরু করা সম্ভব হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৯ জুন ২০২৩