চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে এবার সরকারি খাদ্যগুদামে আমন ধান সংগ্রহের অভিযানে লক্ষ্যমাত্রার দশ ভাগের এক ভাগও পূরণ হয়নি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরে হাজীগঞ্জ ধান সংগ্রহে লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১১৫২ মেট্রিক টন। কিন্তু শেষ সময় এসে এ উপজেলায় মাত্র ১৮৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার হাটবাজারে আমন ধানের দাম ভালো পেয়েছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রির ক্ষেত্রে বেশি শুকানোসহ পরিশ্রম বেশি করতে হয় বলে বাইরে বিক্রিতেই আগ্রহ দেখিয়েছেন তাঁরা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া এই ধান-সংগ্রহের অভিযান শুরু হলেও ২৭ জুন পর্যন্ত মাত্র সংগ্রহ করা হয় ১০ ভাগের এক ভাগ।
খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, সরকারিভাবে প্রতি মণ আমন ধান ধরা হয়েছে ১০৮০ টাকা। এক একজন কৃষকের কাছ থেকে এক মেট্রিক টন করে ধান কেনার কথা ছিল। কিন্তু ধাম বাহিরে বেপারীদের কাছ থেকে ১১ শ টাকা ধরে বিক্রি করতে পেরে কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করছেনা বলে জানা যায়।
উপজেলার কয়েকজন কৃষকের মধ্যে রাজারগাঁও ইউনিয়নের আমির হোসেন, পৌরসভা মাসুদ রানা বলেন, উপজেলার হাটবাজারে প্রতি মণ মোটা জাতের আমন ধান মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১ শ টাকা দরে। চিকন জাতের ধান (আটাশ) প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা পর্যন্ত।
তারা আরো বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামে পরিষ্কার, ঝরঝরে ও শুকনা (মিটার পাস) ধান দিতে হয়। এ জন্য ধান বেশি শুকাতে হয়। সরকার ধানের মণপ্রতি ১ হাজার ৮০ টাকা দেয়। কিন্তু বাইরে কম শুকানো ধান বেশি দামে বিক্রি করা গেছে। অনেক বেপারী আমাদের বাড়ি থেকেই ধান কিনে নিয়ে গেছেন।
পাতানিশ এলাকার কৃষক চাঁন মিয়া খলিফা বলেন, এলএসডি গোডাউনে (সরকারি খাদ্যগুদাম) ধান দিতে গেলে পরিশ্রম বেশি। বাইরে কম শুকানো ধান সরকারি গুদামের চেয়ে কম দামে বিক্রি করলেও লাভ বেশি।
হাজীগঞ্জ খাদ্য গুদাম অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালেহ জাহিদ বলেন, এ বছর সরকারি রেট ১০৮০ টাকা। বাজার মূল্যে দেখা গেছে ১১ টাকার উপরে। কার্ডধারী কৃষকেরা সরকারি তুলনায় বেপারীদের কাছ থেকে ধান বিক্রয়ে আগ্রহ বেশী যে কারনে এ বছরে বিগত বছরের তুলনায় অনেক কম ধান সংগ্রহ করা যায়। আমাদের তালিকাকৃত প্রায় ১ হাজার কৃষকের মধ্যে মাত্র ৮০/৮৫ জন কৃষক অল্প কিছু ধান খাদ্য ভান্ডারে জমা দিয়েছে। মূলত মেইল মালিকেরা বেপারীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে আবার উপজেলার বাজারে চাউলের বস্তা সরবরাহ করে আসছে।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ২৮ জুন ২০২২