হাজীগঞ্জ

হাজীগঞ্জে তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে

হাজীগঞ্জে গত কয়েক দিনের প্রচন্ড গরমে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা গরমে সবচেয়ে বেশি কাবু হয়ে পড়ছেন। তীব্র তাপদাহের কারণে দিনের বেলায় লোকজনের চলাচল অন্য সময়ের চেয়ে অনেকটাই কম। আর এতে করে অতি তাপমাত্রায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন।

সাধারণ মানুষ যেখানে ছায়া তার নিচে বসে তাপদাহ অতিক্রম করতে দেখা যায়। গত কয়েক দিনে চাঁদপুর জেলায় ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে হাজীগঞ্জ কর্ম ব্যস্তময় এলাকায় কাজ করতে গিয়ে সকল পেশার মানুষ দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।

চলমান লকডাউন ও রোজার পাশাপাশি ঈদকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরেও হাজীগঞ্জে লোকজনের উপস্থিত ছিল অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক কম। জরুরী কাজ ছাড়া লোকজন বাসা বাড়ি থেকে তেমনটা বের হতে দেখা যায়নি।

হাজীগঞ্জ বাজারের কিছু অংশে দোকান খোলা থাকলেও তেমন কোন ক্রেতা চোঁখে পড়েনি। যানবাহনে বেশীভাগ অংশে দেখা যায় যাত্রী শূণ্য। সব মিলিয়ে বলা যায় তেমন একটা মানুষের সমাগম দিনের বেলায় বের হতে দেখা যাচ্ছে না।

এমন আরেকটি চিত্র দেখা যায়, উপজেলার ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সামনে শান্তিসুধায় একাধিক লোকের বসে বিশ্রাম করছে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী মিয়া পরিষদে আসা মানুষের জন্য মনোরম পরিবেশে ছাতা আকারের শান্তিসুধাটি স্থাপন করেন।

শান্তিসুধায় বসা অবস্থায় কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, পরিষদে এসেছি কাজে, কিন্তু গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি যে কারণে এখানে বসে শান্তি পাচ্ছি।

তাছাড়া বিভিন্ন পথচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। অতিষ্ট গরমে জন-জীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। শ্রমজীবী মানুষ বাইরে বের হলেই অতিরিক্ত ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ক্লান্তি দূর করতে কেউ পান করছেন ডাবের পানি, কেউবা খাচ্ছেন শসা, লেবুর শরবত। তাই প্রচন্ড গরমে ঠান্ডা পানি আর ডাবের পানি বিক্রি বেড়ে গেছে। লাচ্ছি জুস আর কোমল পানীয়ের ব্যবসাও বেশ জমজমাট।

শহরের ফুটপাতে খোলা জায়গায় লেবুর শরবাত, ঠান্ডা পানি, ডাব বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রচন্ড গরমের ফলে দিনমজুর মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

এদিকে প্রচন্ড গরমের ফলে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। উপজেলা হাসপাতালসহ বাজারের পাইভেট ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সাথে এই গরমের মাঝে বেশীভাগ ওষুধের দোকানে ভিড় লক্ষন করা যায়।

রিকশা চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে প্রচন্ড গরম পড়েছে। ফলে যাত্রীর সংখ্যা অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক কম।

দিনমুজুর ফরিদ মিয়া বলেন, কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হই। কিন্তু যে গরম পড়ছে তাতে কাজ করার কোনো ভাবে সম্ভব নয়।

ডাক্তার মো. মামুন হোসেন বলেন, সুস্থ থাকতে হলে রাস্তার ধারে ফুটপাতে খোলা জায়গায় বিক্রি করা শসা, লেবুর শরবতসহ এসব খাবার এড়িয়ে চলার পরার্মশ দেন।

গরমে বাইরের খাবার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। গরমে সবাইকে প্রচুর পানি পানের পরামর্শ দেন। ঘরের পরিবেশ যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখা গেলে ডায়রিয়া ও শ্বাসজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে বলে জানান এই চিকিৎসক।

প্রতিবেদকঃ জহিরুল ইসলাম জয়

Share