হাজীগঞ্জ

হাজীগঞ্জে ডাকাতিয়া তীরের চরজুড়ে ইরি-বোরো চাষাবাদ

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা মোহনার শাখা জুড়ে ডাকাতিয়া নদীতে জোয়ার ভাটার খেলার মাঝে হাজীগঞ্জ অঞ্চলের স্থানীয় কৃষকরা প্রতিবছরের ন্যায় এবারো চরজুড়ে ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছে।

গত বছর আবহওয়া প্রতিক‚লে থাকায় তাদের ফসল নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে পারেনি।

তার পরেও এবার ডাকাতিয়া নদীর পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় চরএলাকায় স্থানীয় কৃষকরা ইতিমধ্যে প্রায় একশ’একর জায়গায় ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছে। এ বছর যদি আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে ফসল উৎপাদন ঘরে আনা সম্ভব বলে জানান এখানকার কৃষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজীগঞ্জের সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত বলাখাল,অলিপুর, উঠতলি পর্যন্ত প্রায় বৃহত্তর চর এলাকায় স্থানীয়রা তাদের নিজস্ব জমিসহ নদীর দুপাশে সারিবদ্ধভাবে বিভিন্ন জাতের ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছে।

এসব চাষাবাদে তেমন কোনো খরচের মুখ দেখতে হয়না কৃষকদের । শুধুমাত্র নরম মাটিতে ইরি-বোরো চারা লাগিয়ে অল্প কিছু সার ছিটিয়ে দিচ্ছে। এক দেড় মাস পরে শুধুমাত্র জোয়ারের পানি আসলে চারার আগাছা হাত বলিয়ে দিলে পরবর্তীতে ধানের গোছা গজিয়ে শীষ ফুটবে বলে জানান এখানকার কৃষকরা।

মে-জুন মাসে বর্ষার আগাম জোয়ারের পূর্বে যদি ধান কাটতে পারে,তাহলে তাদের কাংক্ষিত ফসল ঘরে তোলা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা। এর আগ পর্যন্ত যতটুকু শ্রম ও ব্যয় তা অনিশ্চচ্ছয়তার মধ্যে দিনগুণতে হবে বলেও তারা বিশ্বাস করেন।

চরজুড়ে ইরি-বোরো ধান চাষাবাদকারী কৃষক অলিপুর গ্রামের বেপারী বাড়ির হূমায়ন এ বছর তিন গোন্ডা পর্যন্ত চারা রোপন করেছেন । একই বাড়ির রুহুল আমিন ১২ গোন্ডা পর্যন্ত লাগিয়েছেন। একই গ্রামের বিল্লাল হোসেন প্রায় ৩০ গোন্ডা পর্যন্ত চাষাবাদ করেছেন।

এভাবে প্রায় ২৫-৩০ জন কৃষক ডাকাতিয়া নদীর কোলজুড়ে ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছেন। এরা বেশি ভাগ বি-২৮ ও বি-২৯ জাতের ধান লাগিয়েছে।

বলাখাল এলাকার কৃষক অলিউল্ল্যাহ,জাবেদ,ওমর দাশসহ কয়েকজন বলেন, আমরা ডাকাতিয়া নদীর দু পাশ জুড়ে যে সকল ধানের চারা লাগিয়েছি তা সম্পন্ন অনিচ্ছয়তার মধ্যে রয়েছি। যগি আবহাওয়া আমাদের অনুক‚লে থাকে তাহলে মাত্র এসব ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে কৃষি অধিদপ্তরের কোনো সুনিদ্দিষ্ট মতামত বা সুযোগ-সুবিধা পাইনি।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মনি সৃত্রধর বলেন, ‘ডাকাতিয়া নদীর দুপাশ জুড়ে ইরি-বোরো চাষাবাদ আমাদের লক্ষ্যমাত্রার বাহিরে। তার পরেও যারা বুঝে কিংবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করে বি-২৮ ধান লাগিয়েছে তাদের ফসল আগামি চার মাসের মধ্যে উঠবে। আর যারা বি-২৯ ধান লাগিয়েছে তাদের ছয়মাস অতিবাহিত হতে গিয়ে দেখা যায়। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। গত বছর অনেক ফসল জোয়ারে তলিয়ে যাওয়ায় আর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি।’

এ বছর ডাকাতিয়া চরের যে একশ’একর ধান লাগিয়েছে তা যদি ভাল আবহাওয়া হয় তাহলে প্রায় ৬ হাজার মে.টন ধান উৎপাদন হবে। এখানকার কৃষকদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ও সার্বিক সহযোগিতা আমাদের পক্ষ থেকে অবস্যই থাকবে।

প্রতিবেদক : জহিরুল ইসলাম জয়
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮ :৫০ পিএম,২৮ জানুয়ারি ২০১৮, রোববার
এজি

Share