হাজীগঞ্জে টানা ১০ ঘন্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া , আহত ৩০

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে এক দফা কর্মসৃচি হিসাবে কোটা বিরোধী আন্দোলকারীদের সাথে কয়েক দফায় টানা ১০ ঘন্টা দাওয়া পাল্টা দাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহবুব উল আলম লিপন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ কুমার দেসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জনের শরীর থেকে রক্তাক্ত জখম হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

কেন্দ্রীয় কোটা বিরোধী আন্দোলকারীদের এক দফা কর্মসৃচি সফল করার লক্ষে ৪ আগস্ট রবিবার সকাল ১১ টার দিকে হাজীগঞ্জ বাজারে অবস্থান নেয় প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাত্র ছাত্রী। এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ হাজীগঞ্জ বাজারে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। এক পর্যায়ে কোটা বিরোধী আন্দোলকারীরা তাদেরকে উদ্দেশ্যে করে হাজীগঞ্জ পৌরসভার সামনে টোরাগড় এলাকায় গেলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় ইট পাটকেল নিক্ষেপ। এসময় পুলিশ উভয় পক্ষকে শান্ত হওয়ার লক্ষে কাঁদানেগ্যাস নিক্ষেপ শুরু করে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারের সেতুর পশ্চিম পাড়ে এসে অবস্থান নেয়। কোটা আন্দোলন কারীরা সেতুর পূর্ব পাড়ে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় দাওয়া পাল্টা দাওয়া দিনব্যাপী রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। আওয়ামী লীগের আহত কর্মীসমর্থকরা হাজীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। ঐদিকে কোটা আন্দোলন কারীদের মধ্যে আহতরা চিকিৎসা নেয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

বেলা ২ টার দিকে কোটা আন্দোলন কারীদের সাথে ছাত্র দল ও ছাত্র শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী যোগ দিয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সাথে দুইটি গাড়ী আগুনে পুড়ে যায়। ভিতরে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ স ম মাহবুব উল আলম লিপনসহ কয়েকজন কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা কর্মচারী আটকা পড়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা মেয়রকে অবরুদ্ধ করে রাখলে ভিতরে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়। পরে মেয়রসহ কয়েকজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাজারের বিসমিল্লাহ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়।

এদিকে হামলা কারীদের আঘাতে যখমপ্রাপ্ত হয় হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মুন্সী মোহাম্মদ মনির, শুকুর আলম শুভ, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হুমায়ুন আজাদসহ প্রায় ২০/২২ জন। অপরদিকে কোটা আন্দোলন কারীদের মধ্যে ইলিয়াছ, সুমন, আল আমিনসহ ৭/৮ জন।

দিনভর রণক্ষেত্র চলাকালে প্রথমে কিছুটা পুলিশের ভূমিকা দেখা গেলেও পরের অবস্থান ছিল নিরব। হাজীগঞ্জ আমিন রোডের মুখে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়ে সেখানে দিনব্যাপী বসে থাকতে দেখা যায়।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে মাইকে সন্ধ্যা ৬ থেকে কারফিউ জারির বিষয়ে অবহিত করে বাজার ছাড়ার অনুরোধ করে সবাইকে। রাত ৯ টা পর্যন্ত আন্দোলন কারীদের বিক্ষোভ চলমান দেখে পুলিশসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আবারো দাওয়াত পাল্টা দাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে আন্দোলন কারীরা বেশ কিছু গাড়ী ও দোকানে আগুন ধরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তবে রাত ১০ পর্যন্ত এ রিপোর্ট লেখা অবস্থায় আন্দোলন কারীদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে জানা যায়।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ৪আগস্ট ২০২৪

Share