চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারের আশ-পাশ এলাকায় বুধবার (৫ এপ্রিল ) সকাল সাড়ে ১১ টায় টানা ৬ দিন ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। বর্তমানে বাজারের শ্রী শ্রী রাজা লক্ষ¥ী নারায়ণ জিউড় আখড়ার সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি কমিটির দ্বন্দ্বে মারাত্মক সংঘর্ষের আশঙ্কা সৃষ্টি দেখা দেয়ায় প্রশাসন উক্ত স্থান ও তার আশ-পাশের এলাকায় ১৮৯৮ সালের ফৌজধারী বিধি অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১৪৪ ধারা জারি করেন।
সনাতন হিন্দু ধর্মলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হাজীগঞ্জ মধ্য বাজার রাজা লক্ষ¥ী নারায়ণ জিউর আখড়া স্থাপিত হওয়ার পর গত ক’বছর ধরে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। বুধবার থেকে অনুষ্ঠিতব্য হরিণামযজ্ঞ মহোৎসবকে কেন্দ্র করে একই স্থানে উভয় কমিটির লোকজন উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করতে বাজারে লিপলেট বিতরণ করে।
জানাযায়, রাজা লক্ষ¥ী নারায়ণ জিউড় আখড়া ৪৪তম বার্ষিক ভুবনমঙ্গল হরিণামযজ্ঞ মহোৎসব ১৪২৩ বঙ্গাব্দ এর ৫ দিন ব্যাপি উৎসবের আয়োজন করেন আখড়া কমিটির সভাপতি বাবু দিলীপ কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুনসহ কমিটির নেতৃবৃন্দ।
এরই মধ্যে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্যে আখড়াকে সজ্জিত করা হয়েছে এবং হরিণামযজ্ঞ মহোৎসবের অনুষ্ঠানের হরিণাম পাঠকারী বিভিন্ন দল দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এরইমধ্যে আখড়া এসে পৌঁছে গেছে। এছাড়াও আখড়ার ভেতরে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রির দোকানের সমাগমও ঘটেছে।
পক্ষান্তরে একই অনুষ্ঠান পাল্টা কমিটির সভাপতি বাবু গৌরপদ সাহা এবং সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ সাহার নেতৃত্বাধীন লোকজন একই স্থানে আয়োজন করেন। যৌথ আয়োজন একই স্থানে হওয়া দু’পক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনা নিয়ে বুধবার উভয় পক্ষের লোকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের কাছে এমন ঘটনার বিবরণ পৌঁছলে ওইদিন দুপুরে হাজীগঞ্জ মধ্যবাজারের আখড়ার ২শ’ গজ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
পরে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম মজুমদারের নির্দেশে সর্ব সাধারণের অবগতির জন্য বাজারে মাইকিং করে ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেয়া হয়। এ জারিকৃত অধ্যাদেশ ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
বুধবার বিকেলে আখড়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায় পর্যাপ্ত থানা পুলিশের লোকজন উপস্থিত রয়েছে। তারা শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আখড়ার ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেন নি। থানা পুলিশ শুধুমাত্র আখড়ার কর্তব্যরত ঠাকুর ও ভেতরে বসবাসরত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ঢুকতে অনুমতি দিচ্ছেন।
পাল্টাপাল্টি কমিটির নেতাদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেও তারা এ বিষযে কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হন নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম মজুমদার বলেন, ‘একই অনুষ্ঠান দু’পক্ষের লোকজন একই স্থানে আয়োজন করায় উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কায় আমি ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয়েছি। বাজারে আগত জনসাধারণ এ ধারার আওয়াতায় পড়বে না। ’
প্রতিবেদক : জহিরুল ইসলাম জয়
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ৪৫ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০১৭, বুধবার
এজি