হাজীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ৪ মামলায় আটক ২৫

সারাদেশের ন্যায়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাত্রা ছিল ভয়াবহ।

গত ১৮ ও ১৯ জুলাই চাঁদপুর কুমিল্লা সড়কের হাজীগঞ্জ বাজার ও টোরাগড় এলাকায় সাধারন ছাত্রদের সাথে যোগ দেয় বিএনপি জামায়াত। সেই দুই দিন পুলিশের সাথে দফায় দফায় দাওয়া পাল্টা দাওয়া করে আন্দোলনকারীরা।

গত ১৮ তারিখ বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ বাজার ও টোরাগড় এলাকায় অবস্থান নেয় কোটা বিরোধী আন্দোলকারীরা। সেই দিন পুলিশের সাথে যোগ দেয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী। এতে সড়কের কিছু যানবাহনে হামলা হয়। দুই পক্ষের দাওয়া পাল্টা দাওয়া কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।

পরের দিন ২০ জুলাই শুক্রবার বিকেলে আবারো চাঁদপুর কুমিল্লা সড়কের এনায়েতপুরে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বেশ কিছু গাড়ী ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ অবস্থান নিয়ে চত্রভঙ্গ করে আসলে আবারো চড়ো হয়ে উঠে আন্দোলনকারীরা। তবে এবার আন্দোলনরত ছাত্রদের সাথে যোগ দেয় বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা। আর এতেই পুলিশ কিছুটা পিছিয়ে পড়লে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেয় টোরাগড় মডেল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের সামনে। আছরের শেষ সময়ে একটি পিক-আপে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সড়কের দুইপাশে শত শত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকারে রূপ নিলে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাফস শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাজীগঞ্জ সার্কেল প্রংকজ কুমার দে, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ ফায়ার সার্ভিসের লোকজনসহ আন্দোলন কারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালায়। দীর্ঘ ৫ ঘন্টার পর আন্দোলন কারীরা পিছু হটলে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়। সেই রাতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। সেই রাতে ৯ জনকে আটক করে পুলিশ।

ঘটনার দুইদিন পর গত ২২ জুলাই থেকে পর পর ৪ টি পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। যা সব মিলিয়ে প্রায় হাজারের উপর আসামী যার বেশীরভাগ বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মী। এসব মামলায় ২৭ জুলাই শনিবার পর্যন্ত ২৫ জনকে আটক করে পুলিশ। বাকি আসামীদের ধরতে পুলিশ মরিয়া হয়ে উঠার আগেই ঘা ঢাকা দিয়েছে বিএনপি জামায়াতের শত শত নেতাকর্মী। 

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ বলেন, সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলনের ভিতর প্রবেশ করে বিএনপি জামায়াত পুলিশের উপর হামলা চালায়। আমাদের অনেক পুলিশ আহত হয়েছে। বিভিন্ন যানবাহনে আগুন লাগিয়ে ভাংচুর লুটপাট করেছে। আমরা যে চারটি মামলা করেছি এরা সবাই বিএনপি জামায়াতের লোক। কোন সাধারণ শিক্ষার্থীর নাম না থাকায় কোন ছাত্রকে আটক করিনি।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল প্রংকজ কুমার দে বলেন, ২০ জুলাই শুক্রবার যে আন্দোলন হয়েছে এতে কোন সাধারণ ছাত্র ছিল না। বিএনপি জামায়াতের ৭/৮ শত লোক টোরাগড় এলাকায় জড়ো হয়ে এ তান্ডব চালিয়েছে। সেই দিন আমিসহ আমাদের চাঁদপুরের সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত কুমার স্যারসহ অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছি। আমরা শুধু জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো এর বাহিরে যেন সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা না হয় এ জন্য আমাদেরকে সঠিক তদন্তের নির্দেশ দেন চাঁদপুর পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম স্যার।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়,২৭ জুলাই ২০২৪

Share