হাজীগঞ্জ

হাজীগঞ্জে আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০

চাঁদপুর হাজীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় প্রায় অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রায় ৩ ঘন্টার চলমান সংঘর্ষে আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশের কাধুঁনি গ্যাস, টিয়ারসেল নিক্ষেপসহ ১২২ রাউন্ড শটগানের গুলি ও লাঠি সোটার মাধ্যমে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের স্বাভাবিক আনতে সক্ষম হয়েছে।

১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা দেড়টা থেকে সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত দফায় দফায় হাজীগঞ্জ বাজারের বিশ্বরোডে এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিন চিত্র দেখা যায়, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কুষ্টিয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙ্গার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় হাজীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়।

মঙ্গলবার ৩ টায় আয়োজিত অনুষ্ঠানের পক্রিয়ার লক্ষে বিশ্বরোডে মঞ্চ সাজানো ছিল। অনুষ্ঠানস্থলে নেতাকর্মীদের আগমনের পূর্বে বেলা দেড়টার দিকে হাজীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী বিশ্বরোডের সভামঞ্চ ভাঙচুর করে সড়কের উপর আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সাথে সড়কের চলমান কয়েকটি গাড়ী ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ, চাঁদপুর ডিভি পুলিশ এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী, সাধারন সম্পাদক গাজী মো. মাঈনুদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক মুরাদ, পৌর যুবলীগের আহবায়ক হায়দার পারভেজ সুজন ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শুকুর আলম শুভসহ নেতৃবৃন্দ সভাস্থলে এগিয়ে এসে প্রতিপক্ষ লোকদের উপর ধাওয়া করে।

দ্বিতীয় ঘটনায় হাজীগঞ্জ কচুয়া সড়কে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার রূপ নিলে পুলিশ উভয় পক্ষের লোকদের দুই দিকে সরিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।

এদিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসৃচির দিকে লক্ষ রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সভাস্থলে আসা মিছিল এক হয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় মিলিত হয়।

বিকাল ৪টার দিকে প্রধান অতিথি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু নঈম পাটোওয়ারী দুলাল ও সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহম্মেদ টেলিকনফারন্সে নেতাকর্মীদের সামনে বক্তব্য চলমান অবস্থায় পুনরায় প্রতিপক্ষ কর্মীরা সভাস্থলকে লক্ষ করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুরো সভা চত্ত্বর ভঙ্গ হয়ে পড়ে।

সর্বশেষ শেষ বিকালের দিকে আওয়ামী লীগের উভয় পক্ষ পুনরায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে এবার নড়েছড়ে বসে প্রশাসন।

এক পর্যায়ে ১২২ রাউন্ড শটগানের গুলি, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনার চেষ্টা করে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মো. মাঈনুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসৃচি হিসাবে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রশাসনের কাছে আমরা অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি পালন করার আয়োজন করেছি। কিন্তু আজকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা এমপির নাম ভাঙ্গীয়ে সভাস্থলে হামলা চালিয়েছে। প্রশাসন তাদেরকে সহযোগিতা করে আমাদেরকে প্রতিহত করেছে।

হাজীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বি বলেন, আজকের কর্মসৃচিতে ব্যানারে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির ছবি না থাকায় এবং বিএনপি জামায়াতের লোক নিয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রীক অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন রনি বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে প্রতিপক্ষ লোকজন হঠাৎকরে হামলা চালিয়েছে। আমাদের নজরে আসার পর উভয় পক্ষের লোকজনকে স্বাভাবিক করতে গিয়ে প্রায় ১২২ রাউন্ড শটগান নিক্ষেপ করা হয়েছে। আমরা জনসাধারণ ও বাজারের ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় সক্ষম হতে পেরেছি। তবে এ ঘটনায় কোন পক্ষ এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও বুধবার ১৬ ডিসেম্বরের কর্মসৃচি উপলক্ষে প্রশাসন মাঠে রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক,১৫ ডিসেম্বর ২০২০

Share