হাজীগঞ্জে আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষক দিবসে সংবর্ধনা পাচ্ছে ৮ শিক্ষক

৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস। দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যালি-সেমিনা ও আলোচনা সভা করার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষক নিয়ে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সেমিনার করার এ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সরকারি নির্দেশে এ প্রথম সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের অন্যান্য উপজেলাসহ হাজীগঞ্জেবিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করা হচ্ছ্। জেলার শিক্ষক সংগঠনগুলোও শিক্ষক দিবস পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

২৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সেবা শাখার সহকারী সচিব মো.মনিরুল ইসলাম মিলনের সই করা আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থী ও সমাজের নানান শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে যাতে সম্মান-শ্রদ্ধাবোধ বাড়ে, সেজন্য র‌্যালি-সভা-সেমিনার থেকে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করতে হবে।

এরই আলোকে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শিক্ষক দিবস পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানকে আড়ম্বরপূর্ণ করতে একটি প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাশেদুল ইসলামকে আহবায়ক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম জাহাঙ্গীর আলমকে সদস্য-সচিব করা হয়। সকল প্রাথমিক,মাধ্যমিক, কলেজ ও মাদ্রসার অধ্যক্ষ বা সুপারগণ এ কমিটির সদস্য। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল সাড়ে ৯ টায় বর্ণাঢ্য র‌্যালি, সংবর্ধনা জ্ঞাপন ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হবে।

এ অনুষ্ঠানে হাজীগঞ্জের বেশ ক‘জন সুধিজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.রাশেদুল ইসলাম। মাননীয় সংসদ সদস্য মেজর অব.রফিকুল ইসলাম বরি উত্তম প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ।

উপজেলা শিক্ষা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার সুনির্মল দেউরী ২ অক্টোবর এ তথ্য জানান।

প্রাপ্ত তথ্যে মতে–- প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ ও মাদ্রাসা থেকে ২ জন করে ৮ জন অবসরপ্রাপ্তদের সম্মানসূচক সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হবে। এ উপজেলায় ১৫৭ টি সরকারি প্রাথমিক স্কুল, ৩৫ টি মাধ্যমিক স্কুল , ৮টি কলেজ ও ২৩ টি মাদ্রাসা রযেছে। উপজেলা পরিষদের কর্মসুচি শেষে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ,ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রাক্তন শিক্ষক দের সমন্বয়ে শিক্ষক দিবস উদযাপন করা হবে।

বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩ এর প্রতিপাদ্য হচ্ছে,“কাংখিত শিক্ষার জন্যে শিক্ষক স্বল্পতা পূরণে বৈশ্বিক অপরিহার্যতা। ’’The teachers we need for the education we want,the global imperative to reverse the teacher shortage.”প্রতি বছরের মতো এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর পালিত হবে।

শিক্ষকতা হচ্ছে মহান পেশা। পৃথিবীতে যতগুলো প্রেসার রয়েছে তার মধ্যে শিক্ষকতাকে মর্যাদার চোখে দেখা হয়। পৃথিবীতে মা বাবার পরের স্থান হচ্ছে শিক্ষকের। শিক্ষাকে দ্বিতীয় বাবা-মা বলা যায়। সমাজে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম।

শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রতিবছর পালন করা হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস। পৃথিবীর সকল দেশের শিক্ষক সমাজের নিকট এ দিনটি অত্যন্ত গৌরব ও মর্যাদার। শিক্ষক দিবস পালনের ইতিহাস খুব বেশিদিন আগের নয় ।

১৯৯৩ সালে বিশ্বের ১৬৭টি দেশের ২১০ টি জাতীয় সংগঠনের প্রায় ৩ কোটি বিশ লাখ সদস্যদের প্রতিনিধিত্বকারী আন্তর্জাতিক শিক্ষক সংগঠন “এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল” গঠিত হয়, এ আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলো কর্তৃক প্রণীত দলিলটি যথাযথ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করার অর্থবহ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ক্রমাগত অনুরোধ ও আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ইউনেস্কোর মহা-পরিচালক ড. ফ্রেডারিক এম মেয়রের যুগান্তকারী ঘোষণার মাধ্যমে ৫ অক্টোবর “বিশ্ব শিক্ষক দিবস” পালনের শুভ সূচনা করা হয়।

১৯৯৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে। শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কিত সাফল্যকে সমুন্নত রাখাসহ আরো সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালের ৫ অক্টোবর থেকে বিশ্বের ১০০ টি দেশে এ দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।

শিক্ষক সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার কারিগর। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সৃষ্টি করে, যার ফলে একজন শিক্ষার্থী সুন্দর মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে এবং সমাজ ও দেশের প্রতি দায়িত্বশীল হয়, শ্রদ্ধাশীল হয়।

আবদুল গনি ,
৪ অক্টোবর ২০২৩

Share