হাজীগঞ্জ

হাজীগঞ্জের ২৩৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে শিক্ষার্থীরা ২১শে ফেব্রুয়ারিতে উচ্ছাসা আর আনন্দের সাথে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে ভাষা শহীদদের।

কিন্তু এক্ষেত্রে ভিন্নতায় রয়েছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ২৩৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যে কারনে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য ছুটির দিনের মতোই কাটিয়ে দেয়।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

এ উপজেলায় ০৭টি কলেজ, ৩৪ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৩টি মাদ্রাসা ও ১৫৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে প্রায় ৭৬টি কিন্ডার গার্টেন স্কুল। মোট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাড়ায় ২৯৭টি।

এর মধ্যে ১টি কলেজ, ১৩টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২৩টি মাদ্রাসা প্রায় ১২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপজেলার ৭৫টি কেজি স্কুলসহ মোট ২৩৫টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এর মধ্যে, কাকৈরতলা জনতা কলেজ, মাধ্যমিক স্কুলের মধ্যে ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়, পালিশারা উচ্চ বিদ্যালয়, বোরখার আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়, বেলচোঁ উচচ বিদ্যালয়, বলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, বড়কুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মালিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, মৈশাইদ পল্লীমঙ্গল এজি উচচ বিদ্যালয়, রান্ধুনীমুড়া উচ্চ বিদ্যালয়, সপ্তগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, একুশে গালর্স স্কুল ও আলকাউসার স্কুলসহ মোট ১৩টি মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসার মধ্যে উচ্চগাঁ ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, ডাটরা শিবপুর আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দেশগাঁও দারুস সুন্নাহ ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, মকবুল আহমেদ ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, মদিনাতুল উলুম ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা, মাদ্রাসায়ে আবেদিয়া মুজাদ্দেদীয়া, রাজাপুর সিদ্দিকীয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা (খিলপাড়া), হাজেরা আলী ক্যাডেট দাখিল মাদ্রাসা, কাকৈরতলা ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসা, কাপাইকাপ ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসা, বলাখাল এনএমএন আলিম মাদ্রাসা, ছালেহ আবাদ এমএন ফাজিল মাদ্রাসা, নওহাটা ফাজিল মাদ্রাসা, নেছারাবাদ ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রসা, বাকিলা ফাজিল মাদ্রাসা, বেলচোঁ কারিমাবাদ ফাজিল মাদ্রাসা, রাজারগাঁও ফাজিল মাদ্রাসা, রামচন্দ্রপুর কাশেমিয়া ছিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা, সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, সুহিলপুর এবিএস ফাজিল মাদ্রাসা, হাজীগঞ্জ দারুল উলুম আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসা, আলী আহম্মদ ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ ২২টি মাদ্রাসা প্রায় ১২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭৫টি কেজি স্কুলে শহীদ মিনার নেই।

এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে ৬ কলেজ, ২১ মাধ্যমিক স্কুল ১ মাদ্রাসায়।

এদিকে ভাষা দিবস সম্পর্কে জানতে চাইলে বেলচোঁ কারিমাবাদ মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, দিবসটি সম্পর্কে তারা স্পষ্ট কিছু জানেন না।

ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোসনা আক্তার চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘তাদের স্কুলে শহীদ মিনার নেই। তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খুব শিগ্রই একটি শহীদ মিনার তৈরি করে দিবেন।’

কাকৈরতলা জনতা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘একটি শহীদ মিনার তৈরির জন্য মাননীয় এমপি’র কাছে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছি, তবে অনুদান পেলে শহীদ মিনার তৈরি করা হবে।’

বেলচোঁ উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, ‘তাদের বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার না থাকার কারণে আমরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে না।’

বোরখাল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো অর্থ না থাকায় তারা শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারেননি। ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, প্রতি বছর স্কুল প্রাঙ্গণে বেঞ্চ, কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলী রেজা আশ্রাফী জানান, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সেটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থেই করতে হবে। কয়েকটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে শহীদ মিনার তৈরির জন্য তাগিদ দেয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম মজুমদার বলেন, ‘যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তারা যেখানে শহীদ মিনার রয়েছে সেখানে গিয়ে পালন করবে। তাছাড়া নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরির জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।’

প্রতিবেদক- জহিরুল ইসলাম জয়
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১: ০০ এএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share