হাজীগঞ্জ উপজেলা ভৌগোলিকভাবে সড়ক, রেলপথ আর নদী পথের গুরুত্ব অপরিসীম। ইতিমধ্যে হাজীগঞ্জ বাণিজ্যিক উপজেলার খ্যাতি অর্জন করেছে। বাণিজ্যের সাথে সাথে ভৌগোলিক কারণে হাজীগঞ্জ উপজেলায় জেলার মধ্যবর্তী হওয়ায় অন্য সকল উপজেলা থেকে যোগাযোগ অনেক উন্নত বলে দাবি করেন হাজীগঞ্জেবাসী। প্রায় পৌনে ৪ লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষিতের হার ৬০% (২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী)।
এ উপজেলার দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ,দক্ষিণ-পশ্চিমে ফরিদগঞ্জ আর চাঁদপুর সদর, পূর্ব-দক্ষিণ ও পূর্বে শাহরাস্তি,উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে মতলব দক্ষিণ,উত্তর ও উত্তর পূর্বে কচুয়া উপজেলার সীমানা দিয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিবেষ্টিত।
প্রাপ্ত এক তথ্যে জানা গেছে – হাজীগঞ্জ উপজেলায় ১২ টি ইউনিয়নের জনংখ্যা- ৩ লাখ ২৭ হাজার ৩শ ৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩শ ৮৮ জন এবং মহিলার সংখ্যা ১ লাখ ৭১ হাজার ৯শ ৮৯ জন। গাণিতিক হিসেবে ১৬ হাজার ৬শ ১ জন মহিলা বেশ্।ি তবে দেশের প্রচলিত জনমিতির হিসেবে ১১ % শিশু।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্র মতে-সরকারিভাবে এখানে ডাক্তারের সৃষ্ঠপদ সংখ্যা ২৬ টি। বর্তমানে রয়েছে ২৫ জন্। সে মতে -হাজীগঞ্জে স্বাস্থ্যসেবায় প্রতি ১৩ হাজার জনের জন্যে একজন ডাক্তার ও সাড়ে ৬ হাজার জনের জন্যে ১টি বেড রয়েছে । তবে সব ডাক্তার শুধুমাত্র হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করছেন না ।
চাঁদপুরের আটটি উপজেলার মধ্যে হাজীগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সকে জনস্বস্থ্যের কথা ভেবে এটিকে ‘মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ হিসেবে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর। সেবাদান কার্যক্রমের বিবেচনায় এনে সারাদেশে প্রতিটি জেলায় একটি করে ৬৪ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘোষণার অংশ হিসেবে এ ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এক তথ্যে জানা যায় – সেবার মধ্যে এএনসি ও পিএনসি সেবা,নরমাল ডেলিভারি ও সিজারিয়ান কার্যক্রম সেবা,প্যাথলজিক্যাল সেবা,আউটডোর ও ইনডোর সেবা, এনসিডিসি সেবা, সর্বোপরি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মদক্ষতা,কাজের গুণগত মান পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেকে ‘মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ হিসেবে ঘোষণা করে।
প্রতি মাসে গড়ে ১৪- ১৫ হাজার রোগী এখানে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। এর মধ্যে উপজেলার প্রায় পৌনে ৪ লাখ মানুষের পাশাপাশি পাশ্ববর্তী উপজেলা কচুয়া, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, মতলব ও চাঁদপুর সদর এবং লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার একাংশের জনগণকে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে হাসপাতালটিতে গড়ে নিয়মিত ৫০-৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। আর প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৩িন শতাধিক রোগী একং জরুরি বিভাগে ৫০-৭০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। এছাড়াও এনসিডিসি কর্ণার চালু হওয়ায় ডায়াবেটিক, কিডনি, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানাবিধ সেবা নিতে মানুয় স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে আসে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে নতুন সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এর আন্তরিকতায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ হতে অ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্দ পায় হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ অ্যাম্বুলেন্সটিতে রোগী বহনে ও সেবাদানের সব সুবিধা রয়েছে। হাজীগঞ্জবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে প্রতিনিয়ত চলছে এএনসি ও পিএনসি সেবা, নরমাল ডেলিভারি, প্যাথলজিক্যাল সেবা,আউটডোর ও ইনডোর সেবা, এনসিডিসি সেবা কার্যক্রম।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মো. গোলাম মাওলা এক সাক্ষাৎকারে জাানয়েছেন , ‘ সেবার মান বাড়াতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। সবাই মিলে আমরা যদি কাজ করি- তাহলে বঙ্গবন্ধ’র কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন অনুযায়ী স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোর গোঁড়ায় পৌঁছে যাবে।
যা এ উপজেলার ২২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই এগিয়েছে। এখন মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে আমরা আরও বেশি এগিয়ে যাব। ’
এদিকে হাজীগঞ্জবাসীর স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে প্রতিনিয়ত দৃষ্টি রাখছেন-সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, যুদ্ধকালীন সেক্টরের ১নং সেক্টর কমান্ডার সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম,হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী মাঈনুদ্দিন, হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ.স.ম. মাহবুব উল আলম লিপন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম।
আবদুল গনি
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩