দেশের প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার অন্যতম চাঁদপুরের ব্যবসায়িক প্রাণ কেন্দ্র হাজীগঞ্জ পৌরসভা। নদীপথ, রেলপথ ও সড়কপথ মিলে জেলার দৃষ্টিনন্দন আধুনিক পৌরসভা হিসাবে ইতোমধ্যে দলমত নির্বিশেষে সবার মনে স্থান করে নিয়েছেন।
আধুনিক আলোকসজ্জায় সজ্জিত পৌরসভার আয়ত্বে পড়েছে ৬নং ওয়ার্ড তথা হাজীগঞ্জ বাজার। যেখানে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে ব্যবসা, বাণিজ্য, ব্যাংক, বীমা, কেনা-কাটা, শিক্ষাসহ বিনোদনের জন্য।
কিন্তু বাজারের দক্ষিণ পাশে ডাকাতিয়া নদী আর উত্তর পাশে রেল সড়কের ভিতরে সীমাবদ্ধ অবস্থায় গড়ে উঠেছে বসত বাড়ীসহ বহুতল ভবন। তাই এ নগরবাসীর বিনোদন বলতে দুই পাশের দর্শণীয় এ দুইটি স্থান।
তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বর্তমান হাজীগঞ্জ মধ্য বাজার পৌর হকার্স মার্কেট দিয়ে ডাকাতিয়া নদীর পাড় তথা খেয়া ঘাটটি। বিশেষ করে বিকাল হলে দেখা যায়, খেয়াঘাটের ঘাটলায় সাধারন মানুষ প্রচন্ড ঘরমে শীতল বাতাসে সময় কাটায়।
তাছাড়া নদীর দক্ষিণ পাড়ে বিশাল এরিয়া নিয়ে ক্যাফে গড়ে উঠার কারনে দূর দূরান্ত থেকে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসনের উচ্চতর ব্যক্তিদের আগমন এ খেয়াঘাট দিয়ে দেখা যায়।
গত কয়েক বছর ধরে মানুষের বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে খেয়াঘাটের পাশে গড়ে উঠা পৌর কসাইখানা ও গরুর বটের দোকান। যেখানে প্রতিদিন সকালে একাধিক গুরু জবাই হচ্ছে অথচ ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের অভাবে বিকেল গড়াতেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
সেই সাথে খেয়াঘাটের এ কসাইখানার পাশেই গরুর বটের দোকান বসানোর কারনে মশা-মাছিসহ বিভিন্ন জীবানু ও গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। খেয়াঘাট মাছবাজারের সাধারন ব্যবসায়ীরা থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ নিরবে প্রতিনিহিত এমন দুর্ভোগ পহাতে হচ্ছে।
এখানকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পূর্বে বটের দোকান ছিল ভিতরে মুরগির দোকানের সাথে, কিন্তু গত বছর স্থানীয় কাউন্সিলর আবুবক্কর সিদ্দিক ও প্যানেল মেয়র রায়হানুর রহমান জনি মিলে খেয়াঘাটের উপর এনে বসিয়েছে।
অথচ এ খেয়াঘাটে পূর্বে মানুষ বিশ্রাম করতো, বিকাল হলে বসে আড্ডা দিতো। কিন্তু সে পরিবেশ নষ্ট করে তারা এখানে বটের দোকান বসিয়েছে।
আমরা তাৎক্ষনিক ব্যবসায়ীরা মিলে প্রতিবাদ জানিয়েছি, একাধিকবার মানববন্ধন পর্যন্ত করেছি। কিন্তু তারা বট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিছু সুবিধা নিয়ে এখানে বসিয়েছে।
তাই আমরা আবারো পৌর মেয়রের সুদৃষ্টি কামনা করছি যেন, অচিরেই এখান থেকে বটের দোকান স্থানান্তর করা হয়।
খেয়াঘাটের বটের দোকানদার এরশাদ, বিল্লাল ও মহসীন বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে এ ঘাট ব্যবহার করতে বলেছে। আমরা সে অনুযায়ী এখানে বসে বট বিক্রি করে আসছি।
স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, প্যানেল মেয়র বর্তমান আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা। তিনি চেয়েছেন বিধায় আমি আর বটের দোকানের স্থান পরিবর্তনের সময় বাধাঁ দিয়ে রাখতে পারিনি।
তবে ইতোমধ্যে আমি খেয়াঘাটে গিয়ে এক মাসের সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জানিয়েছি এর মধ্যে বটের দোকান সরিয়ে নেওয়া হবে।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র রায়হানুর রহমান জনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই খেয়াঘাটে বটের দোকান স্থানান্ত হয়েছে। দুই বছর পর ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে কিভাবে। স্থানীয় কাউন্সিলর যদি অন্য স্থানে বটের দোকান স্থানান্তর করতে পারে তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র আসম মাহবুব-উল আলম লিপন বলেন, খেয়াঘাটের কসাইখানা পূর্বের মেয়রদের সময় থেকে চলে আসছে। বট বিক্রি করে দোকানদাররা পানি ঢেলে দিয়ে যায়।
আশপাশের বাসাবাড়ির লোকজন বিভিন্ন ময়লা পেলে এখানকার পরিবেশ নষ্ট করছে। মৌখিক ভাবে এখানকার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ পেয়েছি, লিখিতভাবে পেলে জনস্বার্থে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিবেদক : জহিরুল ইসলাম জয়