মাটি থেকে বেশ উঁচুতে শক্ত বাঁশের মাচা। মাচার ওপর টিনের ছাউনি। মাচায় ওঠার জন্য রয়েছে শক্ত সিঁড়ি। এই মাচাতেই মাছের আড়ত।
ব্যতিক্রমী এই মাছের আড়তের অবস্থান চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝের চরে। ৪০ বছর ধরে চলা এই মাছঘাটে ২০টি আড়ত রয়েছে। প্রতিদিন বেচাকেনা হয় লাখ টাকার।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এমন মাচাতেই চলে জেলে-আড়তদার আর পাইকারদের হাঁকডাক। কিন্তু বিকেলের পর জেয়ারের পানিতে যেন ভাসতে থাকে মাচা। তখনো চলতে থাকে ইলিশ বিকিকিনি আর লেনদেন। চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের মাঝেরচর মাছঘাটের দৃশ্য এটি।
গত চারদশক ধরে এভাবেই মাচায় চলে আসছে আড়তদারি। নদীর তীরে হওয়ায় জেলেরাও দ্রুতই মাছ বিক্রি করে নগদ অর্থ গুনতে পারেন। এখানে মাছ বিক্রি করলে ঠকতে হয় না বলে জানান জেলেরা।
জেলে রফিক সরদার, আবুল মিয়া ও রহমান শেখ জানান, আমরা এখানেই মাছ বিক্রি করি। মাছের দাম ভালোই পাই। দাম নিয়ে কখনো ঠকতে হয়নি।
মাচার এ ঘাটে ২০টি আড়ত রয়েছে। মাছের দামও তুলনামূলক কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে খরচ বেড়ে যায়। তারপরেও চাঁদপুরের স্থানীয় মাছ মানুষ একটু বেশি দামেই কেনে। তবে সমস্যা হলো প্রতিবছরই নদীভাঙনের কারণে মাচা উঠিয়ে সরিয়ে নিতে হয়। এতে আড়ত পরিচালনা ব্যয় বেড়ে যায়।
স্থানীয় চেয়ারম্যান সালাউদ্দীন সরদার বলেন, ‘ভাঙনের জন্য বিশেষ কিছু করার নেই। তবে জেলেদের জন্য সরকার নির্ধারিত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেয়া হয়।’
চাঁদপুরে ছোট-বড় মোট ৩০ মাছঘাট রয়েছে। এ ঘাটটি বিচ্ছিন্ন চরে এবং চাঁদপুরের দক্ষিকের শেষ প্রান্তে। দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চযাত্রীরা চাঁদপুরের সীমানায় প্রবেশের দু-এক কিলোমিটারের মধ্যেই পশ্চিম দিকে তাকালেই চোখে পড়বে মাচার এই মাছঘাট।
করেসপন্ডেট,১২ সেপেটম্বর ২০২০