হাইমচর উপজেলার তেলির মোড় লঞ্চ ঘাট বাজারে ৩টি জুয়েলারী দোকান সহ ৯ টি দোকানে মঙ্গলবার(১১ নভেম্বর) রাত ১ টার দিকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদল ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালিয়ে নগদ টাকা সহ প্রায় ৫০ ভরি সোনা লুট করে। তাদের হামলা ও নির্যাতনে প্রায় ১০ ব্যবসায়ী আহত হওয়া খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, রাতে ব্যবসায়ীদের ডাক চিৎকারে এলাকার লোকজন জড়ো হলে ডাকাত দলের সাথে লোকজনের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে মোঃ আবুল হোসেন, নাসির ও কোশিক জুয়েলারী কর্মচারী সেম্পু গুরুতর আহত হয়। আহতদের প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মো: আদম আলীর মুদি দোকান। তার দোকান থেকে প্রায় ৫৫ হাজার টাকাসহ মালামাল নিয়ে যায় এবং তার ছোট ভাই খলিলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে।
কৌশিক শিল্পালয়ের থেকে ৩০ ভরি সোনা ও নগদ টাকা এবং কর্মচারি সেম্পুকে গুরুতর আহত করে।
উত্তম স্বর্নকার থেকে কর্মচারীকে বেঁধে ৫ ভরি ৪ লক্ষাধিক টাকা অলংকার নিয়ে যায়।
বাবু ষ্টোর থেকে মালিক বাবুকে বেঁধে নগদ টাকাসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতি হয়।
আবুল হোসেনকে মারধর করে নগদ টাকাসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায়।
নাসির ষ্টোর থেকে ৫০ হাজার টাকার মালামাল, আলামিন ষ্টোর থেকে নগদ টাকা ও মালামাল, ওয়াদুদ ষ্টোর মালিককে মারধর করে মালামাল, নয়ন শিল্পালয় থেকে থেকে কর্মচারিকে বেঁধে রেখে ২৫ ভরি সোনা ও ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায় ডাকাতরা।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী সেলিম বেপারী বলেন, “আমি দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় দেখি ট্রলারে এসে নদীর পাড়ে থামলো। হাতে থাকা টস লাইট মেরে দেখি ট্রলারে ৩০ থেকে ৩৫জন লোক শর্টপেন্ট ও গেঞ্জি পড়ে আছে, হাতে বড় বড় চাপাতি। লাইটের আলোতে তাদের হাতের অস্ত্রগুলোও চকচক করতেছে। আমি তা দেখে চলে যাওয়ার সময় আমাকে ধরে এনে বেঁধে রাখে আমার সাথে আরও ৩০ জনের মতো লোক এনে হাত পা বেঁধে মাটিতে পেলে রাখে। এরপর তারা ফিল্ম স্টাইলে ৩০ মিনিটের মধ্যে দোকানগুলোর তালা ভেঙে সব লুট করে নিয়ে যায়।”
ব্যবসায়ী ওয়াদুদ জানান, আমি দোকান বন্ধ করে ভেতরে ভাত খেতে বসেছিলাম এমন সময় পাশের দোকানের আবুল হোসেন ভাইয়ের চিৎকার শুনতে পাই। আমি দোকানের ভিতরে থেকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে আমরা পার্টির লোক। তুইকি বাঁচতে চাস নাকি মরতে চাস যদি বাঁচতে চাস তাহলে চুপ করে দেখ আমরা কি করি। এই বলে আমার হাত পা বেঁধে ফেলে রাখে।
এ ব্যাপারে পাশ্ববর্তী জগন্নাথ মন্দিরর সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী লক্ষণ চন্দ্র জানান, “আমরা চিৎকার আওয়াজ শুনে বাড়ি থেকে এসে দেখি একদল ডাকাত সবার হাতে অস্ত্র নিয়ে দোকানের মালামাল লুট করতেছে। তখন আমরা ১০ থেকে ১৫জন মানুষ তাদের ধাওয়া করলে তারা আমাদের লক্ষ্য করে ককটেল ছোড়ে। আমরা খালি হাতে ছিলাম তাই তাদের কাছে যেতে পারিনি। তাদের সাথে আমাদের ১০/১৫ মিনিট ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়ালি উল্লাহ অলি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, “রাতে সংবাদ পেয়ে পেট্রোল ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌছার পূর্বেই ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ডাকাত দলের কোন সন্ধান ফেলে পুলিশ প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে।”
বিএম ইসমমাইল
।। আপডেট: ০২:০০ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০১৫, বুধবার
ডিএইচ