Home / চাঁদপুর / আনন্দঘন পরিবেশে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ
P-Club-anondho-Bromon

আনন্দঘন পরিবেশে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ

শত কর্মব্যস্ততা থেকে নিজেদের কিছুটা প্রশান্তি দিতে এবং প্রকৃতির সাথে নিজেদের অবগাহন করাতে ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সদস্যরা প্রতি বছরের ন্যায় এবারো আনন্দ ভ্রমণ উদযাপন করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত (দুইদিন তিন রাত) এই আনন্দ ভ্রমণ শেষে রোববার ভোরে সকলে নিরাপদে চাঁদপুর এসে পৌঁছেছেন।

গাজীপুর জেলার বেশ ক’টি পর্যটন স্পট এবং সর্বশেষ ঢাকার আশুলিয়াস্থ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস ভ্রমণ করেন প্রেসক্লাব সদস্যরা। এই বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অংশ নেন।

সব মিলিয়ে শতাধিক অংশগ্রহণকারীর বহর নিয়ে গাজীপুর জেলা ভ্রমণ করে আসেন চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক আহসানুজ্জামান মন্টুসহ প্রেসক্লাবের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

চাঁদপুর থেকে সম্প্রতি বদলী হওয়া গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম চাঁদপুর প্রেসক্লাবের এই আনন্দ ভ্রমণ বহরের সার্বিক খোঁজ খবর রাখেন। একটা সময় সকলের সাথে তিনি আনন্দে অংশ নেন এবং সকলকে এক বেলা আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন।

এছাড়া ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও চাঁদপুরের কৃতি সন্তান ড. এম এ সবুর খানও সকলকে একবেলা আপ্যায়ন করান।

বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টায় এমভি ময়ূর-৭ লঞ্চযোগে সকলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ভোরে ঢাকা সদরঘাট পৌঁছে সেখান থেকে তিনটি উন্নতমানের বাসযোগে গাজীপুরের সোহাগ পল্লীতে পৌঁছান। সোহাগ পল্লীর পুরো কটেজ প্রেসক্লাবের এই ভ্রমণ দল একদিন এক রাতের জন্যে ভাড়া নেয়া হয়। এখানকার সুইমিং পুলসহ আরো দর্শনীয় স্পট সবাই ঘুরে দেখেন এবং সুইমিং পুলে শিশুরাসহ অনেকেই আনন্দ উল্লাস করেন।

এখানে জুমার নামাজ আদায় ও দুপুরের খাওয়া শেষে সবাই নন্দন পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা হন। নন্দন পার্কে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করা হয়। এখানকার আকর্ষণীয় স্পট এবং বেশ কিছু রাইডস্ দর্শন করেন এবং উপভোগ করেন সবাই। বিকেলে গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম নন্দন পার্কে আসেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাত করতে। সকলের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয় এবং অনেকেই তাঁর সাথে ছবি তোলেন।

এ সময় সেখানে বেশ আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পুলিশ সুপারের সাথে কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর যিনি চাঁদপুরের বিভিন্ন থানায় এবং চাঁদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনেক বছর চাকুরি করেন, তিনিও ছিলেন।

সন্ধ্যার পরপর সকলে আবার সোহাগ পল্লীতে ফিরে আসেন। এখানে রাত ৮টায় পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের উপস্থিতিতে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, তাঁর স্বামী মোঃ হেলাল উদ্দিন, কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মির্জা জাকির, এসএ টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি মোঃ শাহজাহান মিয়া প্রমুখ।

আলোচনা পর্ব উপস্থাপনায় ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আনন্দ ভ্রমণ উদ্যাপন উপ-কমিটির সদস্য সচিব জিএম শাহীন। এরপর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতৃবৃন্দ গান পরিবেশন করেন, সাথে তাদের সহধর্মিণীগণও ছিলেন।

আবার অনেকের সহধর্মিণীগণ গান গেয়েছেন সাথে কণ্ঠ মিলিয়েছেন তাঁদের স্বামীরা। পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারও গান গেয়েছেন। এভাবেই আনন্দঘন পরিবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হয়।

এ পর্ব উপস্থাপনায় ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী। আলোচনা পর্বে পুলিশ সুপার চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দসহ চাঁদপুরের সকল সাংবাদিককে শুভেচ্ছাস্বরূপ ক্রেস্ট প্রদান করেন। এ পর্বে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। রাতে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার প্রেসক্লাবের ভ্রমণ দলের সাথে নৈশভোজে অংশ নেন।

ভ্রমণের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে সোহাগ পল্লী থেকে সকলে বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে যান। সেখানে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (হাজীগঞ্জ থানার সদ্য বিদায়ী অফিসার ইনচার্জ) মোহাং জাবেদুল ইসলাম সকলকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর তিনিসহ তাঁর সঙ্গী পুলিশ সদস্যদের দিকনির্দেশনায় সাফারী পার্কের দর্শণীয় স্পটগুলো সকলে ঘুরে দেখেন। এখানে গাড়িতে চড়ে বাঘ, সিংহ ও ভাল্লুকসহ বনবাদাড়ে বিচরণ করা জীবজন্তু সকলে ঘুরে দেখেন।

দুপুরে সাফারী পার্কের বাঘ রেস্টুরেন্টে সকলকে আপ্যায়ন করান পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার। এরপর ঢাকার আশুলিয়াস্থ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ভ্রমণ দল চলে আসে। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে সবাই এখানে এসে পৌঁছে। পুরো ক্যাম্পাস দেখে সকলেই মুগ্ধ হন।

ড. এম এ সবুর খানের সৌজন্যে এখানে সকলকে নৈশভোজ করানো হয়। এর আগে সকলকে নাশতা করানো হয়। এখান থেকে রাত সোয়া ৮টায় সদরঘাটের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ দল রওনা হয়। রাত ১২টায় এমভি রফরফ লঞ্চযোগে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে সকলে যাত্রা করেন। রোববার ভোর সাড়ে তিনটায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এসে সবাই পৌঁছে।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের এই বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে সফলতার সাথে সম্পন্ন হওয়ায় সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির এবং আনন্দ ভ্রমণ উদ্যাপন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ওমর পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব জিএম শাহীনসহ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।

করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর, ২০১৮