‘বইয়ের দিকে বাড়াও হাত, ঘুচে যাবে অন্ধরাত’-এ স্লোগানকে ধারণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক বই উপহার কর্মসূচি পালন করেছে প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি। শিক্ষার বিস্তার ঘটানো,যুবসমাজকে ফেসবুক থেকে ফিরিয়ে এনে বইয়ের টেবিলে বসানো এবং পাঠ্যসূচির বাইরের জগতের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করানোর প্রত্যয় নিয়ে এমন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০ টায় হাইমচর উপজেলার বাজাপ্তি রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজনটি সম্পন্ন হয়। উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কবি ফেরারী প্রিন্স ও সদস্য সচিব আবদুল বারেক খানের নেতৃত্বে আয়োজনটি সম্পন্ন হয়।
বিদ্যালয় প্রধানশিক্ষক এমএ মান্নানের সভাপ্রধানে এবং চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক কবি রফিকুজ্জামান রণির সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফোকাস মোহনার প্রকাশক ও সম্পাদক মুহাম্মদ মাসুদ আলম।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়ক কাকলী চক্রবর্তী,সমন্বয়ক রহমত হোসেন সাগর ও নৃত্য পরিচালক আফসানা আক্তার তন্বী। বই উপহারের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সাধারণ জ্ঞানের দিকে উৎসাহিত করতে আয়োজন করা হয় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার প্রদানপর্ব।
কুইজ প্রতিযোগিতায় ৫টি পুরস্কারই লুফে নেয় ছাত্রীরা। বিজয়ী শিক্ষার্থীরা হলো- সুমাইয়া আক্তার(অষ্টম শ্রেণি),শামীমা আক্তার(নবম শ্রেণি),সুমাইয়া আক্তার(দশম শ্রেণি),দিলনাহার মমতা ঐশী(নবম শ্রেণি), নাবিলা আক্তার(নবম শ্রেণি)। বই উপহার কর্মসূচির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো-‘ফেসবুক ও পাঠ্যসূচির গণ্ডিতে আর নই,চর্যাপদের সঙ্গে থেকে পড়বো সকল বই’
এ বিষয়ে চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক কবি রফিকুজ্জামান রণি জানান, `প্রত্যেক মাসে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছুটে গিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের হাতে সৃজনশীল ও মননশীল বই তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। গ্র্রামগঞ্জের মানুষজন সবসময়ই সৃজনশীল বই-ম্যাগাজিন পড়তে আগ্রহী কিন্তু হাতের কাছে খুব সহজে পায় না। তাই আমরা কাঁধে বই নিয়ে তাদের দরোজায় গিয়ে দাঁড়াতে চাই।’
জেলার প্রতিটি উপজেলায় অন্তত ১০০টি করে বই উপহার দিয়ে জেলার ৮ উপজেলায় পর্যায়ক্রমে কমপক্ষে ৮০০ বই উপহার দেয়ার ইচ্ছে আমাদের আছে। ইতোমধ্যে মতলব উপজেলায় ১০০কপি, চাঁদপুরের বিভিন্ন সুধিজন,সংগীত প্রতিষ্ঠান,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রায় ২৫০কপি,বর্তমানে হাইমচরে ১১০ কপি বই সহ একমাসে ৪৬০টির মতো বই ও শিক্ষাসামগ্রী উপহার হিসেবে তুলে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।
সুশিক্ষার প্রসার লাভে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নানামুখি উদ্যোগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরাও কাজ করতে চাই। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সহযোগিতা ও মানুষের ভালোবাসা চাই। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জেলার বাইরেও বইয়ের আলো ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা করবো আমরা। সবাইকে অনুরোধ করবো মাদকদ্রব্য পরিহার করে, ধূমপানে অযথা অর্থব্যয় না করে মানুষের হাতে একটি বই তুলে দিতে আমাদের সহযোগিতা করুন।
সেই সাথে জঙ্গীবাদমুক্ত আলোকিত জাতি গঠনে আপনারাও অবদান রাখুন। বই উপহার কর্মসূচিতে সহযোগিতায় ছিলেন কবি বীরেন মুখার্জী, কবি প্রত্যয় হামিদ, কবি রহিমা আক্তার মৌ, হাসান বেপারী ও উত্তরণ চলচ্চিত্র টিম।
করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০১৯
এজি