হাইমচরের হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ

চাঁদপুরের হাইমচরে সিএনজি স্কুটার চালক সোহেল হত্যা মামলায় ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন চাঁদপুর জেল ও দায়রা জজ আদালত।

মঙ্গলবার (২৬ জুন) দুপুর ১টার দিকে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এ রায় দেন।

হত্যার শিকার সোহেল খান হাইমচর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাজাপ্তী এলাকার মো. আলম খানের ছেলে। সে পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিলেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই এলাকার আক্তার হোসেন, মো. খলিলুর রহমান, রাসেল এলাহী ওরফে আব্দুর রহমান।

মামলার বিবরন থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ মাগরিব নামাজের কিছুক্ষণ পর হাইমচর থানাধীন লামছড়ি মৌজার বাজাপ্তি চরের পূর্ব পাশের্^ মেঘনা শাখা নদীর পাড়ে আসামীরা পরস্পর যোগাযোগ ও পূর্ব পকিল্পনা অনুযায়ী সোহেল খানের কাছ থেকে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে মারপিট ও তলপেটে ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং মৃতদেহ নষ্ট করার জন্য মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়।

এরপর ১৭ এপ্রিল সকাল ১০টা ৩৫ ঘটিকায় জনৈক আবুল হোসেন মেম্বার মেঘনা নদীর লামছড়ি এলাকায় সোহেল খানের মরদেহ ভাসতে দেখেন। তিনি বিষয়টি হাইমচর থানা পুলিশকে অবহিত করেন। এই ঘটনায় ওই সময় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় হাইমচর থানার এসআই আবদুল হালিম ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন। ওই সময় নিহত সোহেল খানের পিতা আলম খান মরদেহ সনাক্ত করেন। পরে তার মরদেহ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠান।

ময়না তদন্তে সোহেল খানের নাভির নীচে ডানে ও বামে ৬ ইঞ্চি কাটা লম্বা দাগ ও অন্ডকোষের উপরে চামড়ায় ৩ইঞ্চি লম্বা জখম দেখতে পান এবং সোহেল খানের মরদেহ পঁচা ও ফুলা দেখে অনুমান করা হয় ৪ থেকে ৫ দিন পূর্বে ঘটনা ঘটে। তার বয়স অনুমান করা হয় ২০ বছর। এরপর এসআই আব্দুল হালিম একই দিন অজ্ঞাতনামা আসামী করে দন্ড বিধি ৩০২/৩৪ ধারার অপরাধে থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করেন। এরপর মামলাটির তদন্তভার অর্পন করা হয় এসআই প্রেমানন্দ মন্ডলকে। তিনি তদন্তকরে উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আমান উল্যাহ বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর মামলাটি আদালতে চলমান অবস্থায় ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জন সাক্ষ্য গ্রহন করেন। উল্লেখিত আসামীরা পলাতক রয়েছেন। তাদের অনপুস্থিতিতে আদালত সাক্ষ্য প্রমান ও নথি পর্যালোচনার ভিত্তিতে ৩০২/৩৪ ধন্ড বিধিতে প্রত্যেক আসামীকে মৃত্যুদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন।

সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ ও আসামীর পক্ষে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী ছিলেন আলহাজ¦ মো. ইকবাল-বিন-বাশার।

প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক

Share