স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ চাঁদপুরে আসছেন। মাত্র আট বছরের মাথায় এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় বারের মতো ইলিশের রাজধানীতে পা রাখলেন।
জাতির পিতার এই সুযোগ্য কন্যা বরণ করে নিতে গত এক মাস ধরে অধির আগ্রহে দিন গুণছিলো মেঘনা পাড়ের চাঁদপুরবাসী। এর আগে এর আগে ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল প্রধামন্ত্রী হিসেবে তিনি চাঁদপুর সফর করেন।
ওই সময় তিনি চাঁদপুর ১শ’ ৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রেরের ভিত্তিফলক উন্মোচন শেষে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেন। এবারের চাঁদপুর সফরকালে তিনি হাইমচরে স্কাউটসের কমডেকাসহ জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন এবং চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দিবেন।
তিনি জেলার ২৩ টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও ২৪ টির ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে ,যে সব প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সেগুলো হলো : চাঁদপুর জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্টাফ কোয়ার্টার, চাঁদপুর পৌরসভার পুরাণবাজার ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার, নতুনবাজার ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার ও জলাধার, ইব্রাহীমপুর সাখুয়া এলাকার মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প সংরক্ষণ প্রকল্প, মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকা সংরক্ষণে হাইমচরে অংশ এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্প , চাঁদপুর সরকারি কলেজের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন, মতলব উত্তরে সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন, মতলব উত্তরে কালিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের একাডেমিক ভবন,কচুয়া বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন,ফরিদগঞ্জের লাউতলী ডা.রশিদ আহম্মেদ উচ্চ বদ্যালয় ও কলেজেরএকাডেমিক ভবন,শোল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, মতলব উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন,ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপেক্স ভবন, জেলার ৮ উপজেলার ৬০ জন ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার জন্য বাসস্থান,হাইমচরের ডেলের বাজার-চরভৈরবী সড়ক উন্নয়ন,সদরের রালদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ,হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ,আমিনুল হক পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ,কদমতলা পৌর সুপার মার্কেট, স্বৈরাচারবিরোধী ’৯০-এর গণআন্দোলনে শহীদ জিয়াউর রহমান রাজু স্মরণে ‘রাজু চত্বর’, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, চাঁদপুর ও মতলব ধনাগোদা নদীর ওপর মতলব সেতু ।
যে সব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন সেগুলো হলো :মতলব দক্ষিণের গালিম খাঁ গেট নির্মাণ, কচুয়ার জগৎপুর অংশে সীমানা গেট নির্মাণ,ফরিদগঞ্জে চরমান্দারী স্থানে সীমানা গেট নির্মাণ,মতলব দক্ষিণ উপজেলা পরিষদে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ,কচুয়ার সৌধ নির্মাণ,হাইমচরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ , হাজীগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ,কচুয়া পৌরসভার ভ-ূগর্ভস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ, মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর জেলার হরিণা ফেরিঘাট এবং চরভৈরবী এলাকার কাটাখাল বাজার রক্ষা প্রকল্প,ফরিদগঞ্জের বাশারা উচ্চ বদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ,সাহেবগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মতলব দক্ষিণের হজরত শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ,নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ,মতলব পৌর ভূমি অফিস নির্মাণ, নারায়ণপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ,চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, শাহরাস্তির কনৈ ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ,কচুয়া দক্ষিণ ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, কাদলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, হাইমচরের ঈশানবালার শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়ক, মতলব উত্তরের স্বাস্থ্য কমপেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, চাঁদপুর পরিবার পরিকল্পনা অফিস নির্মাণ ও চাঁদপুর পৌর অফিস ভবন নির্মাণ ইত্যাদি।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনে চাঁদপুরে ব্যাপক উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন এবং আরো বেশকিছু নতুন উন্নয়ন কাজের ঘোষণা শোনার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে শান্তিপ্রিয় জেলাবাসী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ৯ বছরে চাঁদপুরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মেঘনার ভাঙ্গন থেকে জেলা বাসীকে রক্ষা। তাই চীর ঋণী জেলাবাসী প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত চাঁদপুরবাসী। তাঁর এই আগমন এবং জনসভাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই পুরো চাঁদপুরে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন এবং জনসভাকে সফল করতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন একাধিন সভা-সেমিনার করেছে। অপরদিকে দলের সভানত্রেীকে বরণ করে নিতে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোএকাধিক প্রস্তুতি সভা করেছে। প্রিয় নেত্রীর আগমনে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বিপুল উৎসাহ আর উদ্দিপনা। ৩১মার্চ প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠের মঞ্চে হয়েছে সর্বশেষ প্রস্তুতি সভা।
সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ত্রান ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল প্রমুখ। এছাড়াও জনসভার সর্বশেষ প্রস্তুতি খোজ নেন সাবেক মন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর এমপি, মেজর (অব:) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এসময় নেতৃবৃন্দরা জানায়, জনসভায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সমন্বয়ে ৫শ’ স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকবে।
সকাল ১১টায় পর থেকে জনসভায় প্রবেশের ৪টি গেইট খুলে দেয়া হবে। সমাবেশে কেউ ব্যানিটি ভ্যাগ আনতে পারবে না। নেতাকর্মীরা মাঠে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারলেও সভার মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কেউ মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ জনসভাস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। তাছাড়া জনসভায় বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারী দেয়া হয়।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম