সংসদে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ভুল সংবাদ ছাপার সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নতুন আইন প্রণয়ন করার দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে ডেইলি স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি হলুদ সাংবাদিকতা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন করতে হবে।
দশম সংসদের নবম অধিবেশনে বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, আপনি (মাহফুজ আনাম) একজন রাজনীতিবিদের চরিত্র হনন করলেন। আমাদের ল্যাংটা করা হলো, তার (মাহফুজ আনাম) কিছু হবে না, এটা হতে পারে না। এই ধরনের আইন থাকতে পারে না। একজন মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা ভুল করলে জেলে যেতে হয়। আর ভুল সংবাদ ছাপলে তার কিছু হবে না, এই আইন থাকতে পারে না।
ব্রিটেনের একটি ঘটনার অবতারণা করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিবিসিতে ২০১২ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসের দিকে একজন রাজনীতিবিদকে নিয়ে একটি ভুল সংবাদ ছাপানো হয়। ওই ভুল সংবাদ ছাপানোর দায়ে বিবিসি’র তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদত্যাগ করেছিলেন। পদত্যাগের পর নভেম্বর মাসের ৯ তারিখে বিবিসিতে থেকে নয়, বাইরে এসে একটি স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন। একইভাবে ব্রিটেনের ১১০ বছরের পুরনো পত্রিকা ‘নিউজ অব দি ওয়ার্ল্ড’ একটি ভুল সংবাদ ছাপানোর জন্য ওই পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিক পদত্যাগ করেছিল। শুধু পদত্যাগই করেনি ১১০ বছর চলার পর সেই পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি ভুল সংবাদ ছাপানোর জন্য সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের সংসদে ডেকে কয়েক ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ বিবিসি’র সম্পাদকের মতো সাহস দেখিয়ে পদত্যাগ করেনি। এদের মতো লোকের কিছু হবে না। তাই এ ধরনের আইন থাকতে পারে না।
তথ্যমন্ত্রী ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি হলুদ সাংবাদিকতা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন করতে হবে।
পাকিস্তান দূতাবাস কাশিমবাজার কুঠি
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্যে ও ঢাকায় পাকিস্তানের দূতাবাসের দুই কর্মকর্তার কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, পাকিস্তানের ঢাকার দূতাবাস কাশিমবাজার কুঠিতে পরিণত হয়েছে। আমাদের এখন ভাবতে হবে পাকিস্তানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা হবে কি না?
তিনি বলেন, পাকিস্তান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা মাজাহার খান বিদেশী অর্থ নিয়ে ধরা পরলো, তাকে গ্রেফতার করা হলো। পাকিস্তানের হাইকমিশনার তাকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিলেন। এরপর তাকে প্রত্যাহার করা হলো। আরেকজন কর্মকর্তা সেকেন্ড সেক্রেটারি ফারিনা আরশাদ জঙ্গীদের উস্কানি দেওয়া শুরু করলো। কয়েকজন জঙ্গী ধরা পরার পর তারা স্বীকার করলো, ফারিনা আরশাদ তাদের উস্কে দিয়েছে। পরে ওই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করলো। এতে কি বুঝতে পারি আমরা? এখন নতুন করে ভাবতে হবে পাকিস্তানের কি সম্পর্ক আমাদের থাকবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী বলেন, আইন করতে হবে, বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে, তাদের বিচার করার। যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে বাংলার মাটিতে তাদের বিচার করার অধিকার আমাদের রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে খালেদা জিয়া বক্তব্যে তুলে ধরে শাজাহান খান বলেন, এই ধরনের কথা যারা বলে তাদের নাগরিকত্ব থাকা উচিত না। আইন করতে হবে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করার। যুদ্ধাপরাধীদের লাশ কোন দেশ গ্রহণ করে না। গোলাম আযম, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আলী আহসান মুজাহিদ এদের লাশ বাংলাদেশের মাটিতে দাফন করা হয়েছে। এরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে ছিলেন। বাংলাদেশে এদের দাফন করা উচিত হয়নি।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ১১:১২ অপরাহ্ন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বুধবার
এমআরআর