কবিরুল ইসলাম কবির, হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) :
ঠাকুরগাঁয়ের হরিপুর উপজেলা হাসপাতালটিতে নার্স থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে চলছে বহিরাগত একজন স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে রোগীর শরীরের ইনজেকশন দেওয়া থেকে শুরু করে সকল নার্সের কাজ। কাগজে-কলমে ডাক্তার নার্স থাকলেও তারা অজ্ঞাত কারণে নিয়োমিত আসার ফলে হরিপুর উপজেলা হাসপাতাটিতে চিকিৎসা সেবার মান ভেঙ্গে পড়েছে।
নার্সের কাজ স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে করার ফলে প্রতিদিনই রোগীরা নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, হরিপুর উপজেলার মানুষ আদি যুগ হতে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। হাতুড়ে ডাক্তার, ওঝা ও কবিরাজের ঝাড়ফুঁকের উপর নির্ভর করে এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান। তাই এ অঞ্চলের চিকিৎসা সেবার মান উন্নতি করার জন্য ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ২০০৯ সালে দাতা সংস্থা এইচএনপিডাব্লিউপি’র অর্থায়নে ৫০ শয্যা উন্নীত করা হয়।
৫০ শয্যার হাসপাতালে ১৪ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও কাগজে কলমে আছে ১০ জন। কাগজে কলমে ১০ জন ডাক্তার থাকলেও প্রকৃতভাবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থাকে প্রতিদিন দুই থেকে তিন জন। ওই দুই থেকে তিন জন ডাক্তার দিয়ে চলে উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা।
বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের জন্য কথা বললেও বাস্তবে এর কোনো সুফল বয়ে আসছে না। তাই প্রতিনিয়ত এ উপজেলার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে অকালে চিকিৎসা সেবার কশাঘাতে ধুঁকে ধুঁকে মরছে।
অপরদিকে ৫০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল এখনো পোস্টিং না দেওয়ার কারণে এবং হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা নিয়োমিত না আসার ফলে কোনোরকম দায়সারাভাবে চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম চলছে
নার্স ও সুপারভাইজারসহ ১৬ জনের কর্মস্থলে আছে মাত্র ৩জন। ফার্মাসিস্ট, জুনিয়র স্কানিস, কার্ডিওগ্রাফার, কমান্ডার, স্টোরকিপার, অফিস সহকারী জরুরুী এসিস্টেন্ট, ক্যাসিয়ার, এমএলএসএস ল্যাবরোটোরি, ওটি বয় ও ড্রাইভারসহ ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর ৮৮জনের কর্মস্থলে থাকে ১৫ থেকে ২০ জন। ৫জন সুইপারের মধ্যে কর্মস্থলে আছে ২জন, তাও আবার মাসে এক থেকে দুই দিন আসে। সুইপার নিয়মিত না আসার ফলে রোগীরদের থাকার ঘর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে রোগীদের সেখানে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে রোগীরা সরকারি চিকিৎসা সেবারমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। রোগীদের ব্যবহৃত টয়লেটগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করার ফলে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্য সরকারিভাবে সরবরাহকৃত বিছানার চাদর রোগীদের নিয়মিতভাবে দেওয়া হচ্ছে না বলে রোগীদের অভিযোগ রয়েছে।
আপডেট: ০১:৪৭ অপরাহ্ন, ১৭ জুন ২০১৫, বুধবার
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম-এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।