করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দ্বিতীয় ধাপে দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। চাঁদপুরে করোনা আক্রান্ত হয়ে এ যাবতকালে অনেক মানুষের জীবন গেছে।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার লকডাউন ঘোষণা করেন। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সকল ধরনের যাত্রীবাহী বাস মাইক্রোবাস ব্যক্তিগত গাড়ি মুভমেন্ট পাস ছাড়া এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলাচল করতে পারবে না।
দেশের প্রতিটি ফেরিঘাটে নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও চাঁদপুর হরিনা ফেরিঘাটের টিকেট মাস্টার খোকন ও ঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি মহসিন ও বাসার মেম্বারের যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রতি রাতে প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রীবাহী মাইক্রো, হাইস গাড়ি ও ব্যক্তিগত গাড়ি মুভমেন্ট পাস ছাড়া পারাপার হচ্ছে।
এক জেলা থেকে অন্য জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হরিনা ফেরিঘাট দিয়ে যাতায়াত করার কারণে চাঁদপুরে করোনা ভাইরাসে অনেক লোক আক্রান্ত হচ্ছে।
প্রতি রাতে চট্টগ্রাম নোয়াখালী ও অন্যান্য জেলা থেকে হাইস ও মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে যাত্রীরা খুলনা-বরিশাল যাচ্ছে।
বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক গাড়ি মুভমেন্ট পাস ছাড়া শত শত যাত্রী নিয়ে হরিনা ফেরি দিয়ে পারাপার হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, লকডাউন ঘোষণা করার পর থেকে যাত্রীবাহী বাস বন্ধ থাকার কারণে হাইস গাড়িতে জনপ্রতি তিন হাজার টাকা করে ১৮ জন যাত্রীর কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে বরিশাল ও খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মুভমেন্ট পাস না থাকলেও হরিনা ফেরিঘাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি ও টিকেট মাস্টারকে গাড়ি প্রতি তিন হাজার টাকা করে দিলে তারা ফেরি দিয়ে পারাপার করে দেয়।
লকডাউন চলাকালীন সময়ে মাইক্রোবাস ও হাইস গাড়ির চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তেমনি করে হরিনা ফেরিঘাটের ইজারাদার ও টিকেট মাস্টার নিজেদের পকেট ভারি করছে।
এদিকে মুভমেন্ট পাস ছাড়া হরিনা ফেরি দিয়ে মাইক্রোবাস পারাপারের খবর শুনে হরিনা নৌ-পুলিশ বেশ কয়েকবার তাদেরকে সতর্ক করলেও পুলিশের কথা না শুনে ঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি মহাসিন ও বাসার মেম্বার পেশী শক্তি ব্যবহার করে যাত্রীবাহী গাড়ি গুলো ফেরিতে উঠিয়ে দিয়ে পারাপার করাচ্ছে।
হরিনা ফেরি ঘাটে জেলা পুলিশের চেক পোস্ট বসিয়ে বহিরাগত যাত্রীবাহী গাড়িগুলো ফেরি ঘাট দিয়ে পারাপার করতে না দেওয়া হলে চাঁদপুর থেকে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এদিকে হরিনা ফেরি ঘাট দিয়ে মুভমেন্ট পাস ছাড়া যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস পারাপার করার ঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঘাট ইজারাদার প্রতিনিধি মহসিন এক সাংবাদিকের সাথে খারাপ আচরণ করেন।
এ সময় ওই ইজারাদার প্রতিনিধি জানান, কোটি টাকা দিয়ে ফেরিঘাট ইজারা নিয়েছি আমরা এইসব নিয়ন্ত্রণ করবো। কোন গাড়ি যাবে আর কোনটা যাবেনা সেটা আমাদের ইচ্ছা কারো কিছু দেখার ও বলার নাই। আমাদের মন মত সবকিছু করব টাকা নিব গাড়ি তুলব কার বাবার কি।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির ম্যানেজার ফয়সাল জানান, মুভমেন্ট পাস ছাড়া কোন যাত্রীবাহী গাড়ি ফেরি পারাপার করার সুযোগ নেই। যে সকল গাড়ির মুভমেন্ট পাস নেই সেগুলো পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেরি পারাপার করা হয়। রাতে মুভমেন্ট পাস ছাড়া গাড়ি পারাপার হওয়ার বিষয়টি জানা নেই তবে রাতে নজরদারি বাড়িয়ে দেওয়া হবে যাতে করে যাত্রীবাহী কোনো গাড়ি পারাপার হতে না পারে।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি,২৩ এপ্রিল ২০২১