সারাদেশ

হত-দরিদ্র ১২ পরিবারকে পুনর্বাসন করলেন ‘পাগলা’ মনসুর

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি ‘পাগলা’ নামে পরিচিত! শুধু কী নামেই পাগলা? না তার কাজকর্মের মাধ্যেও পাগলামির ছাপ দেখে অনেকেই তাকে এমন নামে ডাকেন। তিনি ভিনাইল ওয়াল্ডগ্রুপের সিইও আবেদ মনসুর।

জানা গেছে, এর আগেও তিনি নিজের পকেটের প্রায় একশ কোটি টাকা নিয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন এয়ারপোর্ট রোডের আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে। শুধু তাই নয়; নিজের টাকায় করে দিয়েছেন কমপক্ষে ১৫টি ফুট ওভার ব্রীজের ছাউনী।

কখনো আবার তাকে দেখা গেছে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া পিয়া নামের ৫ বছরের এক শিশুকন্যাকে বুকে টেনে নিতে। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে সেই শিশুকে তুলে দিয়েছেন তার বাবার কোলে।

এখানেই শেষ নয়, প্রায়ই দরিদ্র ঘরের মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করেন তিনি। এ যেন জন্ম না দিয়েও বাবার দায়িত্ব পালন।
এসব দায়িত্ব পালন বিষয়ে তার সরল স্বীকারোক্তি ‘এতেই আমার শান্তি।’

অবশ্য কিছুটা আক্ষেপও পাওয়া গেল তার কথায়। কারণ কিছুদিন আগে বিমানবন্দর সড়কের ‘বনসাই’ নিয়ে আলোচিত-সমালোচনা। অবশ্য এসব সমালোচনা তার কাছে থোড়াই কেয়ার!

তার সাফ জবাব, সমালোচকরা কয়টা গাছ লাগিয়েছেন রাস্তায়! তারাতো সন্তানদের পড়ান ইংলিশ মিডিয়ামে স্কুলে, ব্লক-বাস্টারে দেখেন হলিউড মুভি, বলাকা ছেড়ে উড়েন এ্যামিরেটসে, মাসে চার-পাঁচ বার চাইনিজ না খেলে যেন পেটের ভাতই হজম হয় না, ড্রইং রুমে শোভা পায় বিদেশী নামী-দামী শো-পিচ। অথচ টকশোতে গিয়ে‘টক’শো বানিয়ে ফেলেন টেইক শো! ভাবখানা এমন, যেন দেশ উদ্ধারে ব্যস্ত?

এ বিষয়ে তার প্রশ্ন, সাড়ে পাঁচ লাখ দেশি গাছের ভিড়ে একশটি বিদেশী বনসাইয়ে ক্ষতিটা কোথায়!

এবার জনক্যল্যাণমূলক কাজের অংশ হিসেবে নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত অলাভজনক সংগঠন ‘রিকভার’ থেকে কড়াইল ও সাততলা বস্তির হত-দরিদ্র, বয়স্কদের পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য ১২টি রিক্সা বিতরণ করেছেন।

রিক্সা পাওয়া ১২ জনের একজন সাততালা বস্তির আব্দুর রহিম (৬৮)। রিক্সা পেয়ে তিনি আনন্দে কেঁদেই ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘দ্যাশের সব বড়লোক আর ন্যাতারা যদি এইবাপ জানের মতো পাগলা অইত!

তিনি আরো বললেন, এখখ্যান মাইয়া বিয়্যা দেওনের পর কামের লাইগ্যা নানান জায়গায় ঘোরনেরপর মানুষের লাথি উষ্টা খাইছি। এ্যহন নিজের রিক্সা চালামু, নিজে ট্যাহা কামামু, কওনের কেউ নাই।

এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে আবেদ মনসুর বলেন, জীবনতো একটাই, আমি মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই; মৃত্যুর পরও মানুষ যেন আমার কথা মনে রাখে।আমি যা করি দুঃখী মানুষদের ভালোবেশেই করি এধরণের কাজ করে আমি পাই বুঁনো স্বাদ, আর এ স্বাদে কোন ফরমালিন নাই। কমপ্লিটলি বুঁনো।
এ সময় আগামীতেও তিনি গরীব-দুঃখী মানুষের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।(আমাদের সময়)

নিউজ ডেস্ক:
আপডেট, বাংলাদেশ ৬:৩০ পি.এম, ১১আগস্ট ২০১৭,শনিবার।
এ.এস

Share